‘ইন্দো প্যাসিফিক রূপরেখা নিয়ে চীনের সাথে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না’

|

মাহফুজ মিশু:

বাংলাদেশের ইন্দো প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণাকে সরকারের পরিপক্ক ও সময়োপযোগী কূটনীতি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে না যাওয়ার ইঙ্গিতও ঢাকা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিয়েছে বলে ধারণা তাদের।

জাপান-যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সফরের আগে সরকারের এই অবস্থানের সুফলও সফরে মিলতে পারে বলে মত তাদের। আর আইপিএস রূপরেখা নিয়ে চীনের সাথেও সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না জানিয়ে তারা বলছেন, ঘোষিত অবস্থান বাস্তবায়নে দরকার সমন্বিত উদ্যোগ।

প্রধানমন্ত্রীর জাপান-যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সফরের ঠিক আগের দিন হঠাৎ করেই আইপিএস রুপরেখা ঘোষণা করে বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে জাপান এই উদ্যোগ নিলেও এখন তাতে সবচেয়ে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র। সাথে অস্ট্রেলিয়া আর ভারত তো আছেই। প্রশ্ন হলো, সফরের আগে এই রূপরেখা ঘোষণার তাৎপর্য কী? বা এর ফলে কি সফরে কোনো প্রাপ্তিযোগ হবে ঢাকার?

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলেন, রূপরেখা ঘোষণার তাৎপর্য আছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলের রাজনীতি ভবিষ্যৎ এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এতে করে জাপানের সাথে সম্পর্ক বা প্রধানমন্ত্রীর সফরের আউটকাম সেটা খুব বড়ভাবে প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করছি না। কারণ ইতোমধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে আছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী সফরের সময় এসব বিষয় তুলে ধরলে আমাদের ও তাদের সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রে এই ডকুমেন্টটির টাইমিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই উদ্যোগের মূল কথা মুক্ত ও অবাধ ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে সব দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। এর সাথে সামরিক, রাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত নানা স্বার্থ তো আছেই। সেখানে বাংলাদেশ যে বিশেষ কোনো দেশ বা পক্ষের না, সে বার্তা ইন্দোপ্যাসিফিক রুপরেখায় স্পষ্ট বলে ধারণা।

এ প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলেন, চীনের সাথে কাজ করলে যুক্তরাষ্ট্রকে হারাবো বাঁ যুক্তরাষ্ট্রের স্তাহে কাজ করলে চীনকে হারাবো এই দ্বন্দ্বে আমাদের যাওয়ার দরকার নেই।

সাহাব এনাম খান বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমরা কোন পন্থী এই আলোচনায় বাংলাদেশ সরকার যায়নি। এটি একটি বড় দিক।

প্রচলিত ধারণা, ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশল মূলত চীনকে ঠেকাতে পশ্চিমা উদ্যোগ। আর তাই এতে যুক্ত না হতে সরাসরিই ঢাকাকে পরামর্শও দিয়েছিল চীনা দূতাবাস। প্রশ্ন উঠেছে, এই রূপরেখা ঘোষণার পর ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন হবে কিনা?

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবীর বলেন, চীন-ভারত একদিকে আমদানি অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- ইউরোপীয় ইউনিয়নে রফতানি। কাজেই এই চারটিকে আমাদের রাখতেই হবে। সেটাকে আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করবো তার ওপর নির্ভর করে আমাদের সক্ষমতা।

ঘোষিত এই রুপরেখা বাস্তবায়নে কেবল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়, কৃষি প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন দফতরের কার্যকর সমন্বয় জরুরি বলেও মত বিশ্লেষকদের।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply