শান্ত’র ব্যাটে স্বস্তির জয় বাংলাদেশের

|

সফররত টাইগারদের উদ্দেশে প্রায় পাহাড়সম এক লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল আইরিশরা। শুরুর ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে যথাসময়ে জ্বলে উঠলো নাজমুল হোসেন শান্ত’র ব্যাট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরের পথ দেখিয়েছেন এ বাঁহাতি। শান্ত-হৃদয়ের কার্যকর দুই ইনিংসের সুবাদে জয় অনেকটাই সহজ হয়ে আসে টাইগারদের। শেষ দিকে ৩৬ রানের দারুণ এক ক্যামিও খেলে মুশফিকুর রহিম প্রমাণ দিলেন অভিজ্ঞতার। আর, এর সুবাদেই ৩২০ রান তাড়া করতে নামা বাংলাদেশ পেলো ৩ উইকেটের স্মরণীয় এক জয়।

শুক্রবার (১২ মে) চেমসফোর্ডে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আইরিশদের ৩ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারী টাইগাররা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩ বল খেলে ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তামিমের বিদায়ের পর দেখেশুনেই খেলছিলেন লিটন। কিন্তু দশম ওভারে গ্রাহাম হিউমের বলে আইরিশ উইকেটরক্ষক লরকান টাকারের হাতে ধরা পড়েন তিনিও। ২১ বল মোকাবেলা করা লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ২১ রান।

৪০ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ বিপাকেই পড়ে বাংলাদেশ। এমন বিপদেই বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। দুই বাঁহাতির সেনসিবল ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১৬.২ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। তবে সাকিব ২৬ রান করে সাজঘরের পথ ধরলে ভেঙে যায় তাদের ৬১ রানের জুটি।

সাকিবের বিদায়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়ে সফরকারীরা। তবে স্বস্তি ফেরাতে বেশি সময় নেননি হৃদয় ও শান্ত। ৪৯ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক স্পর্শ করেন তারা দুইজনই। চোখ ধাঁধানো সব শট খেলে ৬৮ রানে হৃদয় আউট হয়ে গেলে ভেঙে যায় তাদের ১৩১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

তবে, পার্টনারকে হারালেও রানের চাকা সচল রাখেন শান্ত। ৮৩ বলে নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ১১৭ রান করে শান্ত যখন সাজঘরে তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে এসেছে বাংলাদেশের হাতে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র পাঁচ রান। আর হাতে ছিল তিন উইকেট। মার্ক অ্যাডায়ারের করা ওভারের প্রথম দুই বলই হয় ডট। ফলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪ বলে ৫ রানের। তৃতীয় বলটি ফুলটস করতে গিয়ে হাই নো করেন অ্যাডায়ার। নো বল হওয়ায় ১ রান পায় বাংলাদেশ। ৪ বলে ৪ রানের সমীকরণ মাথায় নিয়ে স্ট্রাইক এন্ডে যান মুশফিক। ফ্রী হিটের বলেই স্কুপ করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে টাইগারদের জয় নিশ্চিত করেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

এর আগে, প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি আইরিশদের। ম্যাচের আগে হওয়া বৃষ্টি থেকে পাওয়া বাড়তি সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ম্যাচের প্রথম পাওয়ার প্লেতে বল হাতে আগুন ঝরান বাংলাদেশি পেসাররা। ইনিংসের পঞ্চম বলেই হাসান মাহমুদের বাড়তি পেস আর বাউন্সে পরাস্ত হন পল স্টার্লিং। ওই বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেয়া স্টার্লিংকে শুরুতে যদিও আউট দেননি আম্পায়ার। তামিম ইকবাল রিভিও নিলে প্রথম ওভারেই প্রথম উইকেটের দেখা পায় টাইগাররা। সপ্তম ওভারে হাসানের বলে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন আরেক আইরিশ ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি। 

এ সময়, ষোলো রানে দুই ওপেনারকে হারানো আয়ারল্যান্ডের হাল ধরেন অধিনায়ক অ্যান্ডু বার্লবির্নি ও হ্যারি টেকটর। ৪২ রানে বালবির্নি আউট হলে ভেঙে যায় তাদের ৯৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। তবে ততক্ষণে পিচে বেশ ভালোভাবেই সেট হয়ে গেছেন টেকটর। স্বাভাবিকভাবেই শুরু করেন বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরানো। ৪২তম ওভারের শেষ বলে এবাদতের শিকারে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১১৩ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪০ রান। 

তবে টেকটর সাজঘরে ফিরলেও, রানের গতি মোটেও কমেনি আইরিশদের। ডকরেলের সাথে তাল মিলিয়ে বেশ দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন মার্ক অ্যাডায়ার। তার ৮ বলে ২০ রানের ক্যামিওর সুবাদেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে রেকর্ড ৩১৯ রানের সংগ্রহ পায় আয়ারল্যান্ড।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply