চট্টগ্রামে বহুতল ভবন নির্মাণে অনিয়ম; নেই নজরদারি, নির্বিকার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও

|

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামে বেশিরভাগ বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে নকশা বহির্ভূতভাবে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালাও উপেক্ষিত। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক হলেও তা নেন না কেউই। অবাধে অনিয়ম চললেও নজরদারি নেই চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের। অনেকটাই নির্বিকার অন্যান্য সব সংস্থাও।

চট্টগ্রামে আসকারদীঘি পাড় এলাকায় এবিসি হিল নামে পরিচিত ১৫ কাঠার এই পাহাড়ি জমিতে, চলছে ২২ তলা ভবন নির্মাণের পুর্বপ্রস্ততি। এরই মধ্যে এর সামনে অংশ টিন দিয়ে ঘিরে পাহাড়ের বেশকিছু অংশ এবং সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, চট্টগ্রামে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নগরীর প্রাণকেন্দ্রে পাহাড়ি জায়গার ওপর ২২ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো কীভাবে?

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান এ প্রসঙ্গে বলেন, বিধি অনুযায়ী যেহেতু এটা অনুমোদন করে না তাই ভূমি ব্যবহারের যে অনুমোদন তাদের ছিল তা বাতিল হয়ে যায়। তখন তারা নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। আপত্তি করেছিলাম। এখন শর্তসাপেক্ষে তাদেরকে কাজ করতে বলা হয়েছে।

পাহাড় কেটে সমতল করার অভিযোগে, ২০২০ সালে এই জমির মালিককে ২৮ লাখ টাকা জরিমানাও করেছিলো পরিবেশ অধিদফতর। সিডিএ’র দাবি, অনুমতি দেয়া হলেও ভবন নির্মাণে দেয়া হয় হয়েছে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রসহ ৪ শর্ত।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের ক্লিয়ারেন্স না পেলে অনুমোদন পাবে না। এই শর্তেই তাদেরকে এনওসি দেয়া হয়েছে। আমরা এটাও বলে দিয়েছি যে, পাহাড় কাটা রোধে সেখানে পরিবেশ অধিদফতরের সার্ভেইল্যান্স টিম সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকবে।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বহুতল ভবনের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার। ৬ তলার বেশি ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক, অথচ ছাড়পত্র আছে মাত্র ১০২টি ভবনের।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান আরও বলেন, সিডিএতে কর্মরত কেউই হয়তো এ ব্যাপারটিকে উৎসাহিত করেছেন। বিধি অনুযায়ী যেসব জায়গায় ৫-৬ তলা ভবন নির্মাণ করা যায় সেখানে ১০-১২ তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি তারা কোনো না কোনোভাবে নিয়ে নিচ্ছে।

নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, পরিবেশ অধিদফতর ছাড়াও অনুমতি নিতে হয়, সিভিল এভিয়েশনসহ আরও ১১টি সংস্থার। কিন্তু, এসবের তোয়াক্কা করেন না কেউই। নজরদারি নেই সিডিএ’রও।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ঈশা আনসারি বলেন, এখানে কম করে হলেও ৩-৪ লাখ ভবন আছে। এটা প্রজেক্ট আকারে করা উচিত। আমাদের সীমিত সম্পদ ও জনবল নিয়ে এই পর্যায়ের তালিকা করাটা খুবই কঠিন।

গবেষণার তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরীর অন্তত: ১ লাখ ৪২ হাজার ভবন ভূমিকম্প ঝুঁকিতে, এর মধ্যে ৭৫০টিই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply