‘সামরিক আইনে বিচারের নামে পিটিআইকে নিশ্চিহ্নের চেষ্টা চলছে’

|

দ্য ডন থেকে সংগৃহীত ছবি।

একের পর এক মামলা, গ্রেফতার আর হুমকিতে ব্যাপক চাপে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই। অদৃশ্য চাপে গত কয়েক দিনে দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। যারা এখনো ইমরানের পক্ষে সরব, গ্রেফতার করা হচ্ছে তাদেরও। ইমরান সমর্থকদের অভিযোগ, এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে সামরিক বাহিনী। সহিংসতার ঘটনায় সামরিক আইনে বিচারের নামে নিশ্চিহ্নের চেষ্টা চলছে পিটিআইকে। খবর দ্য ডনের।

দীর্ঘদিন পিটিআইয়ের হয়ে রাজনীতি করেছেন শিরিন মাজারি, সামলেছেন মন্ত্রীত্বও। গত দু’সপ্তাহে দুইবার সিনিয়র এ রাজনীতিবিদকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার (২৩ মে) মুক্তি পেয়েই রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ ও পিটিআইয়ের প্রভাবশালী নেত্রী শিরিন মাজারি। তবে তিনি একা নন। গত কয়েকদিনে, আমির কিয়ানি ও মালিক আমিন আসলামসহ আরও কয়েকজন দল ছেড়েছেন।

চাপের মুখেও যারা ইমরানের পক্ষে সরব রয়েছেন, তাদের অন্যতম সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। মঙ্গলবার মুক্তির পরপরই আবারও গ্রেফতার করা হয় তাকে। একইভাবে, কারাগারের গেট থেকে, গ্রেফতার হন পাঞ্জাবের দুই শীর্ষ নেতা জামশেদ ও মুশাররাত চিমা। আইনজীবীরা বলছেন, কয়েকদিনে, ১১ হাজারের বেশি পিটিআই নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। ওয়ারেন্ট ছাড়াই, অভিযান চলছে নেতাদের বাড়িতে।

পিটিআইয়ের আইনজীবী বাবর আওয়ান বলেন, পুরো সরকার মিলে ইমরান খানের একটি ভোটও নষ্ট করতে পারেনি। আমি ইমরান খানের সাথে আছি। পাকিস্তানের কোটি মানুষ তার পাশে আছে। আমরা লুকিয়ে নেই, ময়দানে থেকেই সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবো। গ্রেফতার, মামলাকে আমরা ভয় পাই না।

পিটিআইয়ের অভিযোগ, দলকে চাপে ফেলতে ৯ ও ১০ মে’র নাশকতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীনরা নয়, বরং কলকাঠি নাড়ছে অন্য কেউ। যার লক্ষ্য ইমরান খানকে দমানো। ইমরানের সেনাবিরোধী অবস্থানের কারণে অনেকেই এর পেছনে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা দেখছেন।

বিশিষ্ট পাকিস্তানি রাজনীতি বিশ্লেষক আয়াজ আমির এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, অক্টোবরে নির্বাচন হবে না। এ মুহূর্তে ড্রাইভিং সিটে শাহবাজ শরিফ নয়, বরং অন্য কেউ আছে। এসবের পেছনে যে কলকাঠি নাড়ছে সে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজন করবে না যতক্ষণ পিটিআইকে দমাতে না পারে। ইমরান খানের ক্ষমতায় আসার পথ যেকোনোভাবেই হোক বন্ধ করবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৯ মে ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর ব্যাপক সহিংসতা চালায় তার সমর্থকরা। হামলা হয়, সামরিক বাহিনীর ওপরও। হামলাকারীদের সামরিক আইনে বিচারের প্রস্তাব পাস হয়েছে দেশটির পার্লামেন্টে। এতেই চাপে পড়ে গেছে পিটিআই। শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘাতে যাওয়ার ভয়ে, দল ছাড়ছেন অনেক নেতা। বেসামরিক নাগরিকদের, সামরিক আইনে বিচারের উদ্যোগে, উদ্বেগ জানিয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনও।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply