স্মরণকালের ভয়াবহতম ট্রেন দুর্ঘটনার পর ভারতে তুমুল আলোচনায় ‘কবচ’ প্রযুক্তি। মূলত দু’টি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ আটকাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন বন্ধ করার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তবে দুর্ঘটনায় কবলিত তিন ট্রেনের একটিতেও কবচ ছিল না। প্রায় এক যুগ আগে উদ্যোগ নেয়া হলেও, এখনও দেশটির বেশিরভাগ ট্রেনে এই সিস্টেম নেই। ফলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে বিজেপি সরকার। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
ওড়িশায় তিন ট্রেনের ত্রিমুখী সংঘর্ষে প্রায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে একদিকে শোকের মাতম অন্যদিকে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ভারতের ট্রেনগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিতে তৈরি বিশেষ প্রযুক্তি ‘কবচ’ নিয়ে। অনেকেই বলছেন, ট্রেনগুলোতে এই প্রযুক্তি থাকলে এত প্রাণহানি তো দূরের কথা দুর্ঘটনাই ঘটতো না।
কবচ মূলত ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় সুরক্ষা সিস্টেম। এই প্রযুক্তি থাকলে দুর্ঘটনার শঙ্কা বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেমে যাবে ট্রেন। কোনো ট্রেন ভুলবশত সিগন্যাল অতিক্রম করে ফেললে ‘কবচ’ চালককে সতর্ক করবে। এছাড়া প্রযুক্তিটি ঘন কুয়াশাসহ যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতেও সহায়তা করবে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অরগানাইজেশনের তৈরি এই সিস্টেমে রয়েছে মাইক্রো প্রসেসর, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম এবং রেডিও সংযোগব্যবস্থা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ২০১২ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন প্রযুক্তিটি তৈরি করা হয়। ক্ষমতায় আসার পর, এর নাম পরিবর্তন করে ‘কবচ’ রাখে বিজেপি। বেশ ঘটা করেই এর প্রচারণা চালায় মোদি সরকার। তাদের দাবি ছিল, কবচ ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের রেল দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হবে।
২০১৪ সালেই, প্রযুক্তিটির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এরপর প্রায় এক দশকে মাত্র ২ শতাংশ রেল রুটে কবচ সিস্টেম চালু করতে পেরেছে রেল মন্ত্রণালয়। এত তোড়জোড়ের পরও বেশিরভাগ রুটেই কবচের ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারায় অনেকেই এখন কাঠগড়ায় তুলছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে।
এসজেড/
Leave a reply