শেষ হয়েছে বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

|

ছবি: সংগৃহীত

শেষ হয়েছে বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বরিশালে সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেও দুপুর হতেই পরিস্থিতি বদলে যায়। পুলিশের কাছে হামলার অভিযোগ করেন হাতপাখার মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করিম। এ নিয়ে কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভোটের মাঠ। অন্যদিকে, দুই একটি তুচ্ছ ঘটনা ছাড়া খুলনা সিটিতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল থেকেই পছন্দের নগরপিতা নির্বাচন করতে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সরব উপস্থিতি ছিল ভোটারদের। বিশেষ করে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

সোমবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সার্বিক অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নৌকার মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছে। এভাবে ভোটগ্রহণ চললে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

অন্যদিকে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট প্রদানে বাধা প্রদানের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের ছেলেরা কাজীপাড়ায় ২২ নম্বর ওয়ার্ডে সব মহিলাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।

সোমবার দুপুরে বরিশাল নগরীর এক কেন্দ্রে গিয়ে হামলার শিকার হন হাতপাখার প্রার্থী ফয়জুল করিম। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি অভিযোগ নিয়ে যান পুলিশ কমিশনারের কাছে। ফয়জুল করিম জানান, তিনি কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে অনিয়ম প্রত্যক্ষ করলে তা প্রিজাইডিং অফিসারকে অবগত করেন। ভোটে প্রভাব বিস্তার, নির্বাচনী নীতিমালা ভঙ্গসহ এজেন্টদের উপর হামলার অভিযোগ নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে যান। সেখান থেকে সাবেরা খাতুন স্কুলের ভোটকেন্দ্রে গেলে আওয়ামী লীগের ব্যাজধারীদের হামলার শিকার হন।

বরিশাল পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, একজন প্রার্থীত গায়ে যারা হাত তুলেছে তারা যেই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।

পরে হাতপাখা কর্মীরা বিক্ষোভ করে শহরজুড়ে। দুপুর ২ টার আগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা অবরোধ করে হাতপাখা সমর্থকরা। বিকেল নাগাদ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে লাঠিসোটা নিয়ে শহরে ঢোকার চেষ্টা করে তারা।

২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ ভোটারের সিটি করপোরেশন বরিশাল। ভোটে বেশি আগ্রহী বয়োবৃদ্ধ আর নতুন ভোটাররা। সিটি নির্বাচনে এবার নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১, পুরুষ তার চেয়ে ৩৯ হাজার কম। কেন্দ্রে নারীদের উপস্থিতিও দেখা যায় বেশি। ইভিএমে ভোট দিতে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন কেউ কেউ। তবে বেশিরভাগই উৎসাহী মেশিনের ভোটে।

আগামী ৫ বছরের জন্য যোগ্য ও পছন্দের নগরপিতা নির্বাচন করতে খুলনায় ভোট শুরুর কিছু আগে থেকেই কেন্দ্রে আসতে থাকেন ভোটাররা। দুই-একটি কেন্দ্রে কিছু অভিযোগ ছিল; তা বাদ দিলে সার্বিক পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোর থেকেই দেখা গেছে ভোটারদের সরব উপস্থিতি। দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে নগরবাসী দেয় ভোট। তবে, ইভিএম জটিলতা কিছুটা বিরক্তি তৈরি করে ভোটারদের মাঝে। বরিশালের মতো খুলনায়ও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পুরুষের তুলনায় নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি।

নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন মেয়র প্রার্থীরা। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সবাই। তবে স্বতন্ত্র দু-একজন কিছু অভিযোগ করেছেন। খুলনা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, জনগণ যে রায় দেবে তা মেনে নেয়ার মানসিকতা আমাদের আছে।

অন্যদিকে, খুলনা সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে বলেন, এই সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

এদিকে, দুপুরে খুলনার কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে একজনের ভোট অন্যজন দিয়ে গেছে, এমন অভিযোগে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়।

এবারের খুলনা সিটি নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply