বিলুপ্ত হচ্ছে ওয়াগনার গ্রুপ, অস্ত্র হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু

|

শেষ পর্যন্ত ভেঙেই যাচ্ছে মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপ। এরই মধ্যে সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। দলটি বিলুপ্ত হলে ওয়াগনার যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। তবে যোদ্ধাদের সামনে বিকল্প তিনটি পথ খোলা রাখছে পুতিন প্রশাসন। খবর ডেইলি মেইলের।

গত ২৩ জুন এক অডিও বার্তায় বিদ্রোহের ঘোষণা দেয় ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। তবে এর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বেলারুশের হস্তক্ষেপে সে বিদ্রোহো বাতিল করা হয়। সমঝোতা অনুযায়ী যোদ্ধাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাদের সামনে তিনটি পথ খোলা রেখেছে পুতিন প্রশাসন।

রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, চাইলে চুক্তি স্বাক্ষর করে রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবে ওয়াগনার সেনারা। অন্যথায়, অস্ত্র ত্যাগ করে বাড়ি ফিরে যাবে। এ দুটির একটি পথেও না গেলে নির্বাসনে যেতে হবে সেনা সদস্যদের।

এ নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন ওয়াগনার যোদ্ধাদের বেশ কিছু বিষয়ের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। দেশের অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি সবসময় তার কথা রক্ষা করেন। আর চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে অনুযায়ী ওয়াগনাররা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে পারে। অথবা অস্ত্র ত্যাগ করে বাড়িতে ফিরে যাবে। কেউ চাইলে বেলারুশেও যেতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ নানা বিভিন্ন দেশে ওয়াগনার বাহিনীর সুবিধা ভোগ করেছে রাশিয়া। দেশটির ছায়াযুদ্ধ পরিচালনায় অন্যতম সঙ্গী হয়ে ওঠে দলটি। এই ওয়াগনার গ্রুপ ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে রুশ বাহিনীর সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে। রাশিয়ার এক প্রকার বিকল্প সামরিক শক্তি হিসেবে উত্থান হয় ভাড়াটে সেনা দলটির। এমনকি দলটির যাবতীয় ব্যয়ভার সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হতো বলেও নিশ্চিত করেছেন খোদ প্রেসিডেন্ট পুতিন।

পুতিন বলেন, ওয়াগনার বাহিনীর সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করতো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় বাজেট থেকে গ্রুপটির পূর্ণাঙ্গ অর্থায়ন করা হয়েছে। ২২ সালের মে মাস থেকে ২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ওয়াগনার গ্রুপকে ১ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়েছে।

ওয়াগনারের বিলুপ্তি রাশিয়ার সামরিক শক্তির জন্য বড় ক্ষতি হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। অনানুষ্ঠানিক এ বাহিনীর বিদায়ে পুতিনের একটি অস্ত্র যে দুর্বল হয়ে গেলো তাতে সন্দেহ নেই। মস্কো যদিও অস্বীকার করছে এসব কথা।

মূলত, চেচনিয়ায় যুদ্ধ করা সাবেক রুশ সেনা কর্মকর্তা দিমিত্রি উৎকিন প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াগনার গ্রুপ। কৌশলে যার নেতৃত্ব নেন পুতিনের রাঁধুনী হিসেবে পরিচিত ধনী ব্যবসায়ী ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। দলটির ৫০ হাজার সেনার ৮০ শতাংশই জেল খাটা ডাকসাইটে অপরাধী। অভিযোগ আছে, ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবে ব্যবহারের জন্য জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয় এসব অপরাধীদের।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply