মিয়ানমারে স্থগিত নির্বাচন, আরও বাড়লো জরুরি অবস্থার সময়সীমা

|

মিয়ানমারের সেনা শাসক জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

চলতি আগস্টেই গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মিয়ানমারে। তবে নির্বাচন করা তো দূরের কথা, মিয়ানমার জান্তা দেশটিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে আরও ৬ মাস। এর মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়া। খবর মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি’র।

সোমবার (৩১ আগস্ট) এ ঘোষণা দেন সেনাশাসক মিন অং লাইং। মিয়ানমার জান্তার এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মিয়ানমারের পার্বত্য এবং দুর্গম এলাকাগুলোতে এখনও সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে দেদারসে চলছে সামরিক অভিযান। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আগস্টে সাধারণ নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মিয়ানমার জান্তা। সোমবার জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সেটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সেনা শাসক জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

এ নিয়ে জেনারেল মিন অং হ্লাইং জানান, দেশে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদ দমনে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার। ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ৪৮৯টি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। যাতে প্রাণ গেছে ৭৮২ জনের। এ পরিস্থিতিতে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া অসম্ভব। এ কারণেই ভোট পেছানো হলো। পাশাপাশি সাগাইং, চীন, কায়াহ রাজ্যে বাড়ানো হবে সামরিক অভিযান। তাই জরুরি অবস্থার মেয়াদও বাড়ানো হলো।

এ ঘোষণায় উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। এরইমধ্যে, জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে মিয়ানমারকে আরও সহিংসতা এবং অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে জান্তা। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের পর আড়াই বছরে কয়েকশ’ বিমান অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। হাজারো ঘরবাড়ি জ্বালিয়েছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৬ লাখের বেশি মানুষ। এই সরকারকে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।

মিয়ানমারের সংবিধান অনুসারে, সর্বোচ্চ একবছর পর্যন্ত দেশটিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ থাকতে পারে। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর তিনবার ধাপে-ধাপে বাড়ানো হয়েছে এই সময়সীমা। যা স্পষ্টভাবে সংবিধানের লঙ্ঘন। নিয়মানুসারে, জরুরি অবস্থা বাতিলের ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে তেমন কোনো ইঙ্গিতই নেই জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে। উল্টো, নির্বাচনের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলা হচ্ছে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply