সাইফুল ইসলাম:
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে তৈরি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মধ্যে নিট পোশাকে আয় হয়েছে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার এবং ওভেন পোশাকে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। সবমিলিয়ে প্রায় চার বিলিয়ন ডলার। রফতানি আয় বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রায় কিছুটা স্বস্তি মিলছে। তবে, আগামীতে তা ধরে রাখা নিয়ে সংশয়ে আছেন উদ্যোক্তারা।
এদিকে, উৎপাদন খরচের সাথে কাঁচামালের দাম বাড়ছে। তবে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম আনুপাতিক হারে কম। বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও অর্থ পরিশোধের গতি কমিয়ে এনেছে। এতে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কায় স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
ব্যবসায়ীরা জানালেন, পর্যাপ্ত ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না তারা। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। আর এলসি চালু করতে শতভাগ মার্জিন দিতে হচ্ছে। কিছু ব্যাংক প্রয়োজনীয় ডলার না থাকার অজুহাত দিচ্ছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সাবেক সভাপতি এ মতিন চৌধুরী বলেন, উৎপাদন ও শিপমেন্ট সব পরিকল্পনা করা; এখন ফ্যাক্টরিতে যদি গ্যাস ও বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে তো উৎপাদন করতে পারছি না। তাতে আমাদের অপ্রয়োজনীয় এয়ার ফ্রেইট ও ওভারটাইমে কিছু ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, কাঁচামালের দাম বাড়ছে। অনেকে এলসি করতে পারছে না। সরকার ও ব্যাংকের ডলার রেটে পার্থক্য আছে। তাতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বললেন, বায়াররা পণ্য নিয়ে পেমেন্ট দিচ্ছে না, তখন ব্যাক টু ব্যাকের দায় পরিশোধ করতে পারছি না। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে কোম্পানি রেড মার্ক হয়ে যাচ্ছে। রেড মার্ক হয়ে গেলে ব্যাংক তখন পরবর্তী কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। তখন অন্যান্য আমদানি-রফতারি স্থগিত হয়ে যায়।
তথ্য বলছে, বিভিন্ন মেশিনারিজ আমদানি কমেছে ৫৪ শতাংশ। আর কাঁচামাল আমদানি কমার হার ৪৫ শতাংশ। বড় ধরনের এলসি খোলার প্রবণতাও কমেছে। ব্যাংকারা বলছেন, চাহিদা অনুসারে এলসি চালু করতে তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এলসি খোলার ক্ষেত্রে আগে যে পরিমাণ সময় লাগছিল, তা অনেকাংশে কমে আসছে। এখনও রেশনিং করছি। এসএমই বা ব্রাঞ্চ পর্যায়ে এলসি বন্ধ করছি না। গ্রাহক দেখে এবং পণ্যের গুরুত্ব দেখে এলসি খুলছি। হ্যাঁ, একটা চাপ তো আছেই।
উল্লেখ্য, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, জুলাই মাসে পোশাক খাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
/এমএন
Leave a reply