বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখের আজারবাইজানের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। একইসঙ্গে তারা যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়েছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় আর্মেনীয় বাহিনীটি যা স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে কার্যকর হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
বাকু তার অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের জন্য অভিযান শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী। এই অঞ্চলের ভবিষ্যত এবং সেখানে বসবাসকারী আর্মেনিয়দের নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে আলোচনায় শুরু হবে।
নাগরনো-কারাবাখ একটি বিতর্কিত অঞ্চল। তিন দশক ধরে বিতর্কিত এই অঞ্চল নিয়ে মুখোমুখি প্রতিবেশী দুই দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আন্তর্জাতিকভাবে এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু অঞ্চলটির বড় অংশ আর্টসাখ প্রজাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে। এই প্রজাতন্ত্র একটি আর্মেনিয়ান জাতিগত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে নিজেদের। ১৯৮৮ সালে কারাবাখ আন্দোলনের সূচনার পর থেকে আজারবাইজান এই অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারেনি। ১৯৯৪ সালে নাগরনো-কারাবাখ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান সরকার বিতর্কিত এই অঞ্চল সম্পর্কে অরগানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) এর মিনস্ক গ্রুপের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা করে আসছেন।
সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে ফের প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সেনাদের হামলা-পালটা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নাগোরনো-কারাবাখ অভিযানে নামে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে ব্যাপক হামলা চালায় সামরিক বাহিনী। গুলি, বিস্ফোরণ আর ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হন অন্তত ৩২ জন, আহত হন দুই শতাধিক। বিতর্কিত অঞ্চলটি থেকে আর্মেনিয়দের জাতিগতভাবে নির্মুল করতেই আজারবাইজান এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করে আর্মেনিয়া। আজারবাইজানের এই অভিযানকে তুরস্ক সমর্থন জানালেও সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায় রাশিয়া।
হামলার ঘটনায় আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশনিয়ান বলেন, আজারবাইজান নাগরনো-কারাবাখের আর্মেনিয়ানদের জাতিগতভাবে নির্মূলের লক্ষ্যে এই অভিযান চালায়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে আজারবাইজানের সাফাই গেয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিস্যেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, কারাবাখ আজারবাইজানের মাটি, এটি সবাই জানে। কাজেই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত আর্মেনিয়সহ যারা আজারবাইজানের মাটিতে বসবাস করছে তারা যেনো শান্তিতে সহবস্থান করে। আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আজারবাইজানের পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন করি।
তবে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায় রাশিয়া। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। /এনকে
Leave a reply