গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের জের, বিশ্বজুড়ে রেকর্ডহারে বাড়ছে ইসলামবিদ্বেষ

|

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের জেরে বিশ্বজুড়ে আবারও উগ্রপন্থা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এরইমধ্যে, পশ্চিমা কিছু দেশে মুসলিমদের ওপর নজরদারি বেড়েছে। মূলত গাজার চরম মানবিক বিপর্যয়ের পরও ইসরায়েলের প্রতি পশ্চিমাদের একতরফা অবস্থানে ক্ষোভ বাড়ছে মুসলিম কমিউনিটিতে। কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন সহিংস পন্থাও। বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্বে নতুনভাবে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।

বিশ্বনেতাদের এমন একচোখা নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে। এরইমধ্যে, বেলজিয়ামের ব্রাসেলসসহ দু-এক জায়গায় ঘটেছে বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনা। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ইতালিতে গ্রেফতার করা হয়েছে মিশরের দুই নাগরিককে। ইউরোপের অনেক দেশেই, মুসলিমদের ওপর বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। মুসলিম দেশ থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইসরায়েল। মার্কিনিদেরও বিদেশে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

চলমান উত্তেজনার মধ্যে বিচ্ছিন্ন এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা বিশ্বে নতুন করে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে, মাত্র ছয় বছর বয়সী ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মুসলিম শিশু নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে।

দেশজুড়ে জাতিগত বিদ্বেষ বাড়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। তিনি বলেন, ইতিহাস আমাদের বারবার দেখিয়েছে, ইহুদি বিদ্বেষ, ইসলামভীতি, তৃতীয় লিঙ্গভীতি এগুলো একই সুতোয় গাঁথা। কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর প্রতি ঘৃণা আরও অনেক ক্ষেত্রে বিদ্বেষের দরজা খুলে দেয়। এক সপ্তাহ আগেই আমরা দেখেছি, ইহুদিদের ওপর কীভাবে হামলা হয়েছে। ১৩শ’য়ের বেশি নিরীহ প্রাণ গেছে। ফিলিস্তিনেও সাধারণ মানুষেরা হামাসের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর অনেক দেশেই বেড়েছে হেইট ক্রাইমের সংখ্যা। কমিউনিটিগুলোতে বাড়ছে হিংসা-বিদ্বেষ। কানাডার টরেন্টোতে গত দুই সপ্তাহে অন্তত ১৪টি হেইট ক্রাইমের অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ।

লন্ডন পুলিশের দাবি, চলতি মাসে এ পর্যন্ত ইহুদি বিদ্বেষ সংক্রান্ত দু’শতাধিক অভিযোগ রেকর্ড করেছে তারা। অন্যদিকে, ইসলাম বিদ্বেষী ঘটনা ঘটেছে গত ৪২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরইমধ্যে ইহুদি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তায় কঠোর হয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, ব্রিটেনের ইহুদি কমিউনিটিকে নিরাপদ রাখতে যা করা দরকার, সবই আমরা করবো। সেজন্য আমরা কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিকিউরিটি ট্রাস্টে অতিরিক্ত তিন মিলিয়ন ইউরো তহবিল প্রদান করেছি।

যদিও, কিছু দেশে সব ধর্মের মানুষ একসাথে বিদ্বেষ-সহিংসতা ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের বিভিন্ন এরই মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply