বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ একাডেমিক ডিগ্রিতে আগ্রহী আইআইটি হায়দরাবাদ

|

শিবলী নোমান, ভারতের তেলেঙ্গানা থেকে:

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) হায়দরাবাদ। এমনকি বাংলাদেশের খ্যাতনামা কোনো বিদ্যাপীঠের সঙ্গে যৌথ একাডেমিক ডিগ্রি দেয়ার ক্ষেত্রেও আগ্রহ রয়েছে ভারতের প্রথম সারির এই প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের।

এরই মধ্যে পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে সেখানে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই শিক্ষার্থী। আবাসিক ব্যবস্থা, মাসে ষাট হাজার টাকা আর বছরে এক লাখ টাকা করে পাচ্ছেন তারা। তারা প্রতিষ্ঠানটির ফার্স্ট ফেলোশিপ কর্মসূচির আওতায় এখানে পিএইডি করছেন।

আইআইটি হায়দরাবাদের পিএইচডি ফেলো উৎপল কুমার ঘোষ বলেন, যখন যেটা প্রয়োজন হয়, সেটা আমি পাচ্ছি। আর গবেষণার জন্য তারা আমাকে যথেষ্ট ফান্ড দিচ্ছে।

দেশটির প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে এরইমধ্যে প্রথম সারিতে উঠে এসেছে আইআইটি হায়দরাবাদ। ভারতজুড়ে তিন প্রজন্মের ২৩টি আইআইটির মধ্যে এটি দ্বিতীয় প্রজন্মের। ছকবাঁধা প্রকৌশল শিক্ষার বাইরে বেরিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এখানকার একাডেমিক কোর্স সাজানো হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীর নিজস্ব উদ্ভাবনে এক লাখ রুপি বৃত্তি দেওয়া হয়। তা স্টার্টআপ পর্যায়ে গেলে প্রতিষ্ঠান থেকেই কোম্পানি পর্যায়ে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়। গত পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটির এমন বিভিন্ন স্টার্টআপ প্রায় ১২শ’ কোটি রুপি আয় করেছে।

আইআইটি হায়দরাবাদের পরিচালক অধ্যাপক বি এস মূর্তি বলেন, আমাদের এখানে টেকনোলজি রিসার্চ পার্ক বা টিআরপি রয়েছে। এর পাশেই রয়েছে টিআইপি বা টেকনোলজি ইনোভেশন পার্ক। এখানে প্রায় এক লাখ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। যেখানে যেকোনো স্টার্টআপের বিকাশের জন্য আমরা জায়গা দিয়ে থাকি।

ভারতের বাইরে থেকেও আইআইটি হায়দরাবাদে আসছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্বের যেকোনো খ্যাতনামা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ ডিগ্রি দেয়ার সুযোগও তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

অধ্যাপক বি এস মূর্তি আরও বলেন, কাঠমান্ডু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এখন আমাদের একটি যৌথ ডক্টরেট প্রোগ্রাম আছে। এর আওতায় ওখানকার শিক্ষার্থীরা এখানে এক বছরের জন্য আসবে। যৌথভাবে দিকনির্দেশনা পাবে। এরপর থিসিস সাবমিট করবে। সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেটটা হবে দুটো প্রতিষ্ঠানের যৌথ স্বাক্ষরে। ঢাকার সঙ্গেও আমরা এমনটা করতে পারি।

পিএইচডি ছাড়াও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়তে পারেন। তবে সে জন্য পাড়ি দিতে হয় যোগ্যতার নানাবিধ পরীক্ষা।

প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাডেমিকস ডিন ভারত ভূষণ পাণিগ্রাহী বলেন, জে.ই.ই. অ্যাডভান্সের আওতায় বাংলাদেশসহ অন্য যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এখানে আসতে পারেন। কিন্তু যোগ্যতার মানদণ্ডে খুব কমই উত্তীর্ণ হন। ফলে আমরা কম শিক্ষার্থীকেই নিতে পারি।

২০০৮ সালে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে চার হাজারের বেশি। সব শিক্ষার্থীকে মূল কোর্সের পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে ৪০ শতাংশ ক্রিয়েটিভ মানবিক শিল্পকলা পড়তে হয়, যা প্রকৌশল শিক্ষায় নতুন ধারা তৈরি করেছে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply