ইসরায়েলে হামাসের নজিবিহীন হামলার জেরে শুরু হওয়া যুদ্ধের পূর্ণ হলো এক মাস। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন কিংবা আরব বিশ্বে সীমাবদ্ধ না থেকে এ সংঘাতের উত্তাপ ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। বদলে দিচ্ছে রাজনীতি-কূটনীতির নানা হিসাব-নিকাশ। যার ফলশ্রুতিতে একে দেখা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দেয়া একমাস হিসেবে। কী হবে এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ, তা নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা, চলছে নানা জল্পনা। খবর আল রয়টার্সের।
ঠিক এক মাস আগে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা নিয়ে তেলআবিবের সমস্ত দম্ভ গুঁড়িয়ে দেয় যোদ্ধারা। সেই সাথে নিজেদের বদলে যাওয়া শক্তিমত্তা আর রণকৌশলেরও জানান দেয় হামাস। আর এর জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে এক মাস ধরে চলছে হত্যাযজ্ঞ, গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
ইউনিভার্সিটি অভ মেরিল্যান্ডের অধ্যাপক আনোয়ার সাদাত বলেন, এই যুদ্ধ ইসরায়েল ফিলিস্তিনের আর পাঁচটা সংঘাতের সাথে তুলনা করার মতো নয়। এটা ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, আরব বিশ্ব, ইসরায়েল, মুসলিম দেশগুলোর জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী মুহূর্ত।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে এক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজছে। গোটা অঞ্চলেই উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে, সরগরম রাজনীতির অঙ্গন। বদলে গেছে আসন্ন অনেক সম্পর্ক আর কূটনীতির সমীকরণও। যার মধ্য দিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি নতুন পথে অগ্রসর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গাজায় নির্বিচার হামলায়, আরব দেশগুলোর সাথে অনেকটা মসৃণভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে নেতানিয়াহুর সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেলো বলেই প্রাথমিকভাবে মত বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, পশ্চিমাদের ঢালাও সমর্থন মিললেও নিজ অঞ্চলে কোণঠাসা হয়ে পড়বে ইসরায়েল।
গত এক মাসে আরব বিশ্বের সাথে পশ্চিমাদের মতবিরোধের চিত্র স্পষ্ট হয়েছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত গোটা বিশ্ব। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে যুক্তরাষ্ট্রের ঢালাও সমর্থন এই যুদ্ধকে আরও বিস্তৃতির দিকে ঠেলে দেবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
অধ্যাপক আনোয়ার সাদাত বলেন, যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে হিজবুল্লাহকে এর বাইরে রাখা কঠিন হবে। কিন্তু যদি তারা পূর্ণাঙ্গভাবে ময়দানে নামে, এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জড়াবে। সেক্ষেত্রে ইরানও বসে থাকবে না। আমার মনে হয়, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে ঢালাও সহায়তার মধ্য দিয়ে নিজেদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
মাসব্যাপী কোনো কূটনৈতিক তৎপরতাই সংঘাত বন্ধে কাজে আসেনি। হামাসকে নির্মূল প্রসঙ্গে অনড় ইসরায়েল। কার্যত গোটা ফিলিস্তিনকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর দখলদার বাহিনী। অন্যদিকে স্বাধীনতা ইস্যুতে চুল পরিমাণ ছাড় না দেয়ার বার্তা স্পষ্ট করেছে হামাসও। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধের জল কোনদিকে গড়ায় সে দিকেই নজর সবার।
এসজেড/
Leave a reply