গত এক মাস ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে মৃত্যুপুরী অবরুদ্ধ গাজা। বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ। চারদিকে যুদ্ধের দামামার সাথে চলছে ধ্বংসযজ্ঞ। এর মধ্যেই গাজায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে অপরিণত শিশুর জন্মদান। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েই পৃথিবীর আলোর মুখ দেখছে নবজাতকরা। তাদের জীবনও রয়েছে চরম অনিশ্চয়তায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভকালীন চিকিৎসায় ঘাটতি, পর্যাপ্ত খাবারের অভাব আর প্রচণ্ড মানসিক চাপই এর কারণ। এদিকে অপরিণত শিশুদের রাখতে হচ্ছে ইনকিউবেটরে। তবে, জ্বালানি আর বিদ্যুতের অভাবে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক সংকট।
পর্যাপ্ত খাবারের অভাব আর প্রচণ্ড মানসিক চাপে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান প্রসব করে ফেলছেন গাজার অন্তঃসত্ত্বা নারীরা। তাদের আলাদা যত্নের প্রয়োজন হলেও সংঘাতময় এ পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে নাসের হাসপাতালের নবজাতক বিশেষজ্ঞ আসাদ আল-নাওয়াঝা বলেন, সাধারণত মায়ের ওজন কম থাকলে বা মা যদি মানসিকভাবে হঠাৎ করে খুব চাপের মধ্যে পড়েন তাহলে সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হয়ে যায়। যুদ্ধের কারণে গাজার অন্তঃসত্ত্বা নারীরা খুবই স্ট্রেসে আছেন। একই সাথে পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। এই এক মাসে অপরিণত সন্তানের জন্ম অনেক বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: গাজায় প্রতিদিন ১৬০ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে: জাতিসংঘ
জীবন বাঁচাতে অপরিণত এসব শিশুকে রাখতে হচ্ছে ইনকিউবেটরে। তবে, জ্বালানি সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে উপত্যকার এক তৃতীয়াংশ হাসপাতাল। যে কটি হাসপাতাল এখনও খোলা রয়েছে তাতে হচ্ছে না স্থান সংকুলান।
এ বিষয়ে আসাদ আল-নাওয়াঝা বলেন, হাসপাতালের প্রায় সবকিছুই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গেলে সবকটি যন্ত্র বন্ধ হয়ে যাবে। আর এই ইনকিউবেটরগুলো বন্ধ হয়ে গেলে নিশ্চিতভাবে মৃত্যু হবে নিষ্পাপ শিশুগুলোর। তাছাড়া, অনেকগুলো হাসপাতাল এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্থান সংকুলান নিয়েও।
মাতৃত্বকালীন সঠিক চিকিৎসাও পাচ্ছেন না গাজার নারীরা। ফলে দেখা দিচ্ছে অপরিণত সন্তান জন্মদানসহ নানা জটিলতা। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে গাজায় অন্তঃসত্ত্বা নারী রয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার, যাদের কেউই পাচ্ছেন না গর্ভকালীন চিকিৎসা সেবা। প্রয়োজনীয় ওষুধ আর ইনজেকশন ছাড়াই প্রতিদিন সন্তান প্রসব করছেন গড়ে ১৮০ জন।
/এমএইচ
Leave a reply