৩৪ দিন পেরোলেও মেলেনি বন্দিদের সন্ধান, ক্ষুব্ধ ইসরায়েলিরা

|

জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে বিক্ষোভ করছে মানুষ। ছবি: আল জাজিরা।

মৌলি ইসলাম:

অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড। ৭ অক্টোবরে হামাসের সেই দুর্ধর্ষ অভিযানের পরই গাজা উপত্যকার পুরো দৃশ্যপট পাল্টে যায়। সেসময়, জিম্মি বানানো হয় কয়েকশ’ ইসরায়েলিকে। যা, ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই অভিযানের ৩৪ দিন পেরিয়ে গেলেও, দুই শতাধিক জিম্মির কোন সন্ধান পায়নি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। যুদ্ধবন্দিদের কোথায়, কিভাবে আটকে রাখা হয়েছে, সেটি নিয়ে বাড়ছে স্বজনদের ক্ষোভ-উদ্বেগ।

এরইমধ্যে, বৃহস্পতিবার নতুনভাবে ২ জিম্মির ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে, ইসলামিক জিহাদ। তবে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা নিশ্চিত হলেই তারা মুক্তি পাবে, এমন শর্ত স্বাধীনতাকামী দলটির। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায়।

হামাসের কাছে আটক ইসরায়েলি জ্যাকবের মা রেনান গোম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শিশুরা কখনোই দর কষাকষির বিষয় হতে পারে না। সেটা শুধু ইসরায়েলের ক্ষেত্রে নয়, গাজার ব্যাপারে সমান প্রযোজ্য। কোন অভিভাবকই তাদের সন্তানদের শোচনীয় অবস্থা দেখতে চাইবেন না। আমি এই দুঃস্বপ্ন থেকে বেরুতে চাই। কিন্তু, মন আর মস্তিষ্কে গেঁথে গেছে সন্তানের জিম্মিদশা।

জিম্মিদের বিষয়ে প্রতিনিয়ত তেল আবিব প্রশাসনের ওপর বাড়ছে চাপ। এরইমধ্যে, ইসলামিক জিহাদের প্রকাশিত নতুন ভিডিওতে দেখা যায় ২ জন ইসরায়েলি জিম্মি, যাদের মধ্যে একজন ৭৭ বছর বয়সী নারী হান্না কাৎজির এবং ১২ বছরের ইয়াগিল জ্যাকব।

জিম্মি প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আল-কুদস্ ব্রিগেড একজন মুখপাত্র বলেন, মানবিক এবং শারীরিক অসুস্থতার খাতিরে হান্না কাৎজিরকে আমরা মুক্ত করতে প্রস্তুত। কারণ, তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ নেই আমাদের হাতে। শিশু হওয়ায় ইয়াগিল জ্যাকবকেও আমরা ছেড়ে দিতে চাই। তবে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা নিশ্চিতের শর্ত পূরণ হলেই, মুক্তি পাবেন জিম্মিরা।

অবশ্য, নেতানিয়াহু সরকার ভিডিও বার্তাকে ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছে। তাদের বক্তব্য, যেকোন মূল্যে জিম্মিদের উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

আইডিএফ মুখপাত্র রিয়ার এডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, হান্না আর জ্যাকবের ভিডিও বার্তা প্রমাণ দেয় গাজায় এখনো অবশিষ্ট আছে ইসরায়েলিদের প্রাণের স্পন্দন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি সংকেত। বন্দি এবং তাদের পরিবারকে বলতে চাই, জিম্মিদের উদ্ধারের কোন সুযোগ আমরা হাতছাড়া করতে রাজি নই। প্রত্যেক মুহুর্তে আইডিএফ এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সতর্ক। যেকোন মূল্যে জীবিত ফেরানো হবে ইসরায়েলিদের।

হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তির ব্যাপারে শুরু থেকেই মধ্যস্থতা করছে মিসর ও কাতার। এরই ধারাবাহিকতায়, গেলো ২০ ও ২৩ অক্টোবর দু’দফায় চার নারীকে মুক্তি দেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দলটি। ইসরায়েলের হিসাবে, এখনো আটকা ২৪২ জন।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply