বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়েছিল টসের পরপরই। তবে সুযোগ ছিল অন্তত জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করার। সেখানেও ব্যর্থ ৯২’র বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে ৯৩ রানে। আগে ব্যাট করতে নেমে বেন স্টোকস, জো রুট ও জনি বেয়ারস্টোর ফিফটিতে ৩৩৭ রান দাড় করায় ইংল্যান্ড। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ডেভিড উইলি ও মঈন আলীর বোলিং তোপে ৩৯ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায় বাবর আজমের দল। এই জয়ের ফলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করলো জস বাটলারের দল।
শনিবার (১১ নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। ডেভিড উইলির ইনসুইং ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন আব্দুল্লাহ শফিক। শূন্য রানেই ফিরতে হয় এই ডানহাতি ব্যাটারকে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফখর জামানও। ইনিংসের ৩য় ওভারে উইলির বলে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টোকসের হাতে ধরা পড়েন ১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন।
যদিও বড় লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারেননি তারা দু’জন। ৩৮ রান করা বাবরের বিদায়ে ভাঙে রিজওয়ানের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি। থিতু হলেও ৩৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন রিজওয়ানও। মঈন আলীর বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি। আরেক ব্যাটার সৌদ শাকিল ফিরে যান ২৯ রানের ইনিংস খেলে।
বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন আঘা সালমান। উইলির বলে ফেরার আগে খেলেছেন ৫১ রানের ইনিংস। শেষ দিকে শাহীন শাহ আফ্রিদির ২৫, হারিস রউফের ৩৫ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের ১৬ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন উইলি। এছাড়াও দু’টি করে উইকেট নেন গাস অ্যাটকিনসন, রশিদ ও মঈন। ক্রিস ওকস পান ১টি উইকেট।
এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করে ইংলিশরা। দুই ওপেনার ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টোর উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৮২ রান। তবে পাকিস্তানের হয়ে সেই ঝড়টা থামান ইফতেখার আহমেদ। এই স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ৩১ রান করে ফেরেন মালান। অবশ্য এরপরই চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বেয়ারস্টো। তবে ৫৯ রান করা এই ব্যাটার হারিস রউফের বলে কভারে শট খেলতে গিয়ে আঘা সালমানের হাঁতে ধরা পরেন।
বেয়ারস্টো ফিরে গেলেও তাতে অবশ্য চাপ কমেনি বরং শাহীন শাহ আফ্রিদি, রউফদের উপর চড়াও হন জো রুট ও বেন স্টোকস। এই দুজনের ব্যাটেই দুশ রান পার করে ইংলিশরা। তৃতীয় উইকেটে ১৩২ রানের জুটি গড়েন জো রুট ও বেন স্টোকস। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান স্টোকস এবারও ছিলেন একই পথে। কিন্তু শাহিন আফ্রিদির রিভার্স সুইং করা ইয়র্কারে স্টাম্প হারাতে হয় তাকে। ৭৬ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ৮৪ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
এই জুটি ভাঙার কিছুক্ষণ পর রুটও ফেরেন ৬০ রান করে। এই ডানহাতি ব্যাটারকে স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাঁচের ফাঁদে ফেলেন আফ্রিদি। ইংল্যান্ড অবশ্য তিনশ পার করে অধিনায়ক জস বাটলার (২৭) ও হ্যারি ব্রুকের (৩০) ব্যাটে করে। দুই মিডল ব্যাটারের ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করা শুরু করেন। মাত্র ২৬ বলেই এই জুটি তুলে ৪৫ রান। অবশ্য চার বলের ব্যবধানেই ফেরেন এই দুই ব্যাটার। ইংলিশদের হয়ে শেষ কাজটা করেন ডেবিড উইলি। তার মাত্র ৫ বলে ১৫ রানে ভর করেই ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন হারিস রউফ। তবে ১০ ওভারে ৬৪ রান খরচ করে এদিন লজ্জার রেকর্ডে নাম লেখাতে হয় তাকে। চলতি আসরে ৯ ম্যাচ খেলে ১৬ উইকেট পাওয়ার পেছনে ৫৩৩ রান দেন তিনি। তাতে বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে খরুচে বোলারের নামটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নিজের করে নেন ডানহাতি এই পেসারের। ছাড়িয়ে যান ২০১৯ বিশ্বকাপে বল হাতে ৫২৬ রান দেয়া ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদকে।
Leave a reply