জ্বালানির অভাবে লাকড়ির যুগে ফিরছে ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দারা। অনেকে বাধ্য হয়ে ঘরের আসবাবপত্র পুড়িয়েও রান্না করছেন। কেটে ফেলছেন আশপাশের গাছ। যেন আদিম যুগের কোনো এক জনপদে পরিণত হয়েছে গোটা উপত্যকা। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার বেশিরভাগ বেকারি। যে দু-একটি এখনও টিকে আছে সেগুলো থেকে রুটি পেতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের।
অবরুদ্ধ উপত্যকায় বর্বর হামলা চালানোর পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ত্রাণবাহী ট্রাকও ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। হামাস নির্মূলের অজুহাতে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস করা হচ্ছে। সেই হামলা থেকে বাদ যায়নি বেকারিও। এখনও যে সামান্য কয়টি বেকারি অবশিষ্ট আছে সেগুলোতেও তৈরি হচ্ছে না পর্যাপ্ত রুটি। দু’এক জায়গায় পাওয়া গেলেও সেটি অধিকাংশেরই সামর্থ্যের বাইরে। তেলআবিব যেন বুলেট-বোমার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষদের অনাহারে মারার পরিকল্পনা নিয়ে আগ্রাসন চালাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের এক বাসিন্দা বলেন, পানি নেই, খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই। ঘুমানোর জায়গাও নেই। মেঝেতেই আমাদের বাচ্চাদের ঘুমাতে দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কীভাবে ব্যাখ্যা করবো সে ভাষা জানা নেই। আমরা এখন ক্লান্ত। শুধু একটা কথাই বলবো, আল্লাহই ত্রাণকর্তা এবং আমাদের বিষয়ের নিষ্পত্তিকারী।
হামলা থেকে বাঁচতে গাজার উত্তর থেকে দক্ষিণে বিপুল মানুষ সরে যাওয়ায় সেখানেও সংকট তীব্র হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যে সামান্য খাবার সরবরাহ করছে, জ্বালানি আর বিদ্যুতের অভাবে তাও রান্নার উপায় নেই। বাধ্য হয়ে জ্বালানির আদি উৎস কাঠের দিকে ঝুঁকছে গাজার মানুষ।
নিজেদের দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে গাজার এক বাসিন্দা বলেন, এখানকার পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। গ্যাস নেই, অনেকের বাড়িতে রান্নার জন্য লাকড়িও নেই। বাইরেও এখন লাকড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ঘরে অতিরিক্ত লাকড়ি ছিল। তাই এগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মানুষের কাছে অর্থও নেই। সামান্য অর্থেই লাকড়ি বিক্রি করছি।
এদিকে, ফিলিস্তিনে ছড়িয়ে পড়ছে অনেক সংক্রামক রোগও। ফিলিস্তিনিদের নির্মূলের যেন সব চেষ্টাই করছে ইসরায়েল। এমন বর্বরতার পরও তেলআবিবের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। অসহায় ফিলিস্তিনিদের প্রশ্ন, বিশ্ববাসীর ঘুম ভাঙবে কবে?
/এনকে
Leave a reply