নানা পদক্ষেপেও যখন বাসিন্দাদের বিয়ের আগ্রহ বাড়ানো যাচ্ছে না, তখন ঘটকের ভূমিকায় খোদ নগর কর্তৃপক্ষ। প্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দের পাত্র-পাত্রী খুঁজে দিতে, বিশাল পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে ব্লাইন্ড ডেটের। জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার এক মেয়র কার্যালয় নিয়েছে ঘটকালির এ উদ্যোগ। এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় বিয়ে আর সন্তান জন্মদানে তেমন আগ্রহ নেই মানুষের। গত বছর পাঁচ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে জন্ম নিয়েছিলো মাত্র ২ লাখ ৪৯ হাজার নবজাতক। প্রণোদোনা দেয়াসহ সরকার নানা উদ্যোগ নেয়ার পরও দক্ষিণ কোরিয়ায় বছর বছর কমছে জন্মহার।
এমন যখন পরিস্থিতি, তখন বাসিন্দাদের বিয়েতে আগ্রহী করতে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিলেন রাজধানী সিউলের সিওংনাম শহরের মেয়র। আয়োজন করা হয়েছে জমকালো ব্লাইন্ড ডেটের, যাতে জীবনসঙ্গী খুঁজে পেতে জড়ো হয়েছিলো সাড়ে ৪শ’র বেশি নারী-পুরুষ।
শহর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খোঁজার এই মেগা ইভেন্টে মিলেছে সাফল্যও। ১৯৮ জন নারী ও পুরুষ সিঙ্গেল এসে বাড়ি ফিরেছেন যুগল হয়ে। অবশ্য, যোগ্য সঙ্গী পেতে অন্তত পাঁচটি ধাপ অতিক্রম করতে হয়েছে তাদের।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সিওংনামের মেয়র শিন সাং-জিন বলেন, একক কোনো নীতিতে নিম্নমুখী জন্মহারের এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। প্রয়োজন ব্যাপক পদক্ষেপ। সে লক্ষ্যে এই পদক্ষেপের পাশাপাশি আমরা নবদম্পতিদের আবাসন, সন্তান লালনপালনসহ নানা বিষয়ে সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছি।
বিশ্লেষকরা অবশ্য বলছেন, এই সংকট এখন যে পর্যায়ে দেশটিতে, তা মোকাবেলায় নিতে হবে বিস্তর উদ্যোগ। দেশের মানুষের জীবন যাত্রার উচ্চ ব্যয় কমানো গেলেই এই সংকট মোকাবেলা সম্ভব।
জন্মহার কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সিউল ওম্যান ইউনিভার্সিটির সমাজকল্যাণ বিভাগের অধ্যাপক জাং জায়ে-হুন বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় সন্তান জন্মদানে অনীহা একটি ভয়াবহ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। সংকট বিবেচনায় এই উদ্যোগ যথার্থ কোনো সমাধান নয়। আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে সন্তান জন্মদান এবং লালন-পালনের ব্যয় কমিয়ে আনা গেলে কোরিয়ানদের মাঝে আগ্রহ বাড়বে।
এর আগে, সন্তান লালন পালনে কোরিয়ার নারীদের সহায়তার জন্য অন্য দেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগ পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় দেশটির সরকার।
/এআই
Leave a reply