জামালপুর করেসপন্ডেন্ট:
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও ব্যতিক্রমী আয়োজন ষাঁড় গরু দিয়ে মই দৌড় খেলা। কন কনে এই শীতের ভেতর ফসলের মাঠে কানায় কানায় দর্শক এসেছেন খেলাটি দেখতে। গ্রাম-বাংলার জনসাধারণের জন্য এই খেলা বেশ আনন্দেরও। তবে মই চালকদের জন্য ঝুঁকিও রয়েছে অনেক।
দীর্ঘ ৫০ বছর পর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় মোসলেমাবাদ এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে গেল এই প্রতিযোগিতা। ধান কাটার পর পড়ে থাকা জমিতে সপ্তাহব্যাপী এই খেলাটি বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সমাপনী প্রতিযোগিতার মধ্যেদিয়ে শেষ হয়। উৎসবটি দেখতে ভিড় করেন শিশু, ছাত্র-ছাত্রীসহ নারীরাও।
আয়োজকরা জানান, বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিযোগিতায় ১৪টি দল অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে বিজয়ী হয়, বকশিগঞ্জ উপজেলার নূর নবী মণ্ডলের দল। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন হেলাল উদ্দিন। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
চারটি ষাঁড় গরু দিয়ে একটি মইয়ে থাকেন দুইজন মইয়াল ও তিনজন ধরাল। প্রতিযোগিতার জন্য দুইটি করে মই নিয়ে দাঁড়ানো হয় লাইনে। বাঁশিতে ফু দেয়ার সাথে সাথে দৌড়াতে শুরু করে গরুগুলো। খেলায় অংশগ্রহণ করা গরুগুলো ছুটছে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে। আর এই আনন্দে মেতে উঠেন দর্শকরা।
মুঠোফোনের যোগে তরুণ প্রজন্মের কাছে ব্যতিক্রমী এই খেলা যোগ করেছে নতুনমাত্রা। তারা বলছেন- পরবর্তীতে যেনো এমন আরও আয়োজন করা হয়।
মিরাজ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আজকাল সবাই মোবাইল নিয়ে থাকে। গ্রামেরই এসব ঐতিহ্যবাহী খেলা আবারও শুরু হলে তরুণ সমাজ খেলা সমন্ধে জানতে পারবে। তাদের মাঝে এটি আনন্দের নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে বলেও জানান তিনি।
হারিয়ে যাওয়া গ্রামীন এই খেলা প্রবীণদের মনেও এনেছে পুরোনো দিনের আমেজ। এ বিষয়ে আবেদ আলী নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমাদের সময় অনেক ধরনের খেলা হতো। এখন তো আর এসব নেই। ৫০ বছর পর দেখলাম। অনেক ভালো লেগেছে। ঐহ্যবাহী এ খেলা ধরে রাখতে এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিবছর এমন আয়োজনের দাবি জানান তিনি।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া গরু মালিক মিজানুর রহমান বলেন, আমার ৫টি গরু খেলায় অংশ নিয়েছে। বকশিগঞ্জ থেকে এসেছি। মনের খোরাক থেকেই খেলায় অংশ নিয়েছি।
খেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান বলেন, আমরা এলাকার মুরুব্বিদের কথায় এই খেলাটির আয়োজন করেছি। অনেক দর্শক হয়েছে। সবার সহোযোগিতা পেলে আগামীতেও আয়োজন করবো।
/এনকে
Leave a reply