জামাল খাশোগি নিখোঁজ রহস্য নিচ্ছে নতুন মোড়। জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি– বির্তকিত সাংবাদিককে গুম করার পর, সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন খোদ যুবরাজ সালমান। এ ব্যাপারে রিয়াদ প্রশাসনকে অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে, মার্কিন সিনেটরদের হুমকি- তাদের নাগরিককে অন্যায়ভাবে সৌদি আরব হত্যা করলে; কূটনৈতিক-বাণিজ্যিক ও পররাষ্ট্র সম্পর্ক যাচাইয়ে বাধ্য হবে ওয়াশিংটন।
ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির প্রবেশের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে তুরস্কের হাতে। এমনকি, সন্দেহভাজন ‘হিট স্কোয়াডে’র ১৫ সদস্যের ছবি ও সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করেছে তুর্কি পুলিশ। নজরদারির আওতায় থাকা কালো ভ্যানগাড়ির গতিবিধি নিয়ে চলছে তদন্ত। অথচ, সৌদি প্রশাসন এ ইস্যুতে নিরুত্তাপ।
তদন্তের এই পর্যায়ে বোমা ফাটালো ওয়াশিংটন পোস্ট। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশেই গুম করা হয়েছে তার কট্টর সমালোচককে। মূলতঃ নির্বাসনে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া থেকে খাশোগিকে তোলার পরিকল্পনা ছিলো। শেষ পর্যন্ত অভিযান শেষ হয় তুরস্কে। তার বন্ধুদের বরাত দিয়ে মার্কিন পত্রিকাটি জানায়, গেলো ৪ মাস ধরে সালমান প্রশাসন এই সাংবাদিকের সাথে সমঝোতা চালাচ্ছিলো। এমনকি, তাকে প্রশাসনের উচ্চপদে বসানোর প্রস্তাবও দেয়া হয়। যা নাকচ করেন জামাল খাশোগি।
ওয়াশিংটন পোস্টের গ্লোবাল অপিনিয়ন বিষয়ক সম্পাদক ক্যারেন আতিয়াহ বলেন, ভার্জিনিয়ায় বসবাস করা ওয়াশিংটন পোস্টের একজন সাংবাদিককে এভাবে হত্যা করা অবিশ্বাস্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলবো- সৌদি আরবের বিরূদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন। কারণ, তারা খাশোগিকে উদাহরণ বানিয়ে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। যুবরাজকে বলতে চাই, প্রশাসনের নিন্দনীয় দিক প্রকাশের জন্য খাশোগির পরিবর্তে হাজারো সাংবাদিক রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক চাপে, সাংবাদিক নিখোঁজ রহস্যের ব্যপারে আবারও রিয়াদকে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, সাংবাদিক নিখোঁজ রহস্যে আমরা উদ্বিগ্ন। পুরো ঘটনা জানতে, খাশোগির বাগদত্তাকে হোয়াইট হাউসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজে স্পষ্ট তিনি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছেন। অথচ, এরপরই উধাও। সৌদি প্রশাসনকে বলবো- উপযুক্ত তথ্য দিয়ে তুর্কি গোয়েন্দা পুলিশকে সহায়তা করুন।
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টেও নাগরিক নিখোঁজ ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিনেটররা। অনেকের হুঁশিয়ারি, অভিযোগ প্রমাণিত হলে, পুর্ণবিবেচনা করা হবে সৌদি আরব-মার্কিন সম্পর্ক।
তুর্কি পুলিশ বলছে, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী ২ অক্টোবর কাগজপত্র দেয়ার নামে কনস্যুলেটে ডাকা হয় জামাল খাশোগিকে। শঙ্কা- সেখানেই তাকে হত্যা করে যুবরাজ সালমানের পাঠানো ‘হিট স্কোয়াড’। সৌদি সরকারের কাতার ও কানাডাবিরোধী নীতিমালা; ইয়েমেনে সামরিক অভিযান আর বিরোধী মতাদর্শের ব্যক্তিদের গ্রেফতারের সমালোচনায় সরব ছিলেন তিনি।
Leave a reply