সারাদেশ ডেস্ক:
কুমিল্লা সিটি করপোরেশেনে মেয়র পদে উপনির্বাচন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এবং ছয়টি পৌরসভাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ ও উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শনিবার (৯ মার্চ) সকাল আটটায় ভোট নেয়া শুরু হয়। চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এরপরই শুরু হয়েছে গণনা।
ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা— দুই সিটিতেই ইলেকট্রনিং ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে দুই সিটিতেই ইভিএমে ভোটগ্রহণে বিড়ম্বনা দেখা দেয়। এতে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ ঝরেছে। এছাড়া, কুমিল্লায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনার ঘটেছে। অন্যদিকে, ময়মনসিংহে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। ২০১৯ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নির্বাচন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন ইকরামুল হক। এবার নিজ দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
তিনিসহ এই সিটিতে এবারের নির্বাচনে ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু (ঘড়ি), মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সাদেকুল হক খান মিল্কি টজু (হাতি), ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেসামুল আলম (ঘোড়া), কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক রেজা (হরিণ) ও জাতীয় পার্টির শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল (লাঙ্গল)।
এছাড়া, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩৩টি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে এবার মোট ভোটকেন্দ্র ১২৮টি। নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন।
আর কুমিল্লা সিটিতে সবশেষ নির্বাচন হয় ২০২২ সালের ১৫ জুন। ওই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক। মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় গত ডিসেম্বরে মারা যান তিনি। যে কারণে কুমিল্লায় মেয়র পদে উপনির্বাচন হচ্ছে।
ওই নির্বাচনে আরফানুল হকের কাছে মাত্র ৩৪৩ ভোটে হেরেছিলেন মনিরুল হক (সাক্কু)। আরফানুল হককে জয়ী করার পেছনে ছিলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন। এবার তার মেয়ে ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসীন বাহার প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতীক বাস। স্থানীয় আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সমর্থন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের আরও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তিনি হলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নূর উর রহমান (হাতি প্রতীক)।
অন্যদিকে, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র মো. মনিরুল হক ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (কায়সার) এবারও মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মনিরুল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর নিজাম কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি। মনিরুল হকের মার্কা টেবিলঘড়ি এবং নিজামউদ্দিনের প্রতীক ঘোড়া।
দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গত সিটি নির্বাচনে বিএনপির এই দুই নেতা প্রার্থী হয়েছিলেন। তখন তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন। আর ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৫টি।
দুই সিটি বাদে শনিবার ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভায় উপনির্বাচন, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে। পৌরসভার শূন্যপদে উপনির্বাচন হয়েছে ১৫টিতে, ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ১৩টি, ইউনিয়ন পরিষদের শূন্যপদে উপনির্বাচন ১৯০টি এবং জেলা পরিষদে শূন্যপদে সাতটি উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
/এনকে/এটিএম/এমএন
Leave a reply