জীবিত আয়না বেগম ইউপির নথিতে মৃত, বয়স্ক ভাতা কার্ড আরেকজনকে দিলেন চেয়ারম্যান

|

ভুক্তভোগী আয়না বেগম ও অভিযুক্ত চেয়ারম্যান

হঠাৎ একদিন বয়স্কভাতা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন মারা গেছেন তিনি। খোঁজ করে দেখেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংরক্ষিত নারী সদস্যের কারসাজিতেই কাগজে কলমে মৃত দেখানো হয়েছে তাকে। অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে ভুক্তভোগীর ভাতা কার্ড দিয়ে দেয়া হয়েছে অন্যজনকে। ঘটনাটি, গোপালগঞ্জ কাশিয়ানীর পারুলিয়া ইউনিয়নের। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভুক্তভোগীর ভাতা কার্ড ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে সমাজ সেবা অধিদফতর।

জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকেই বয়স্ক ভাতা পাচ্ছিলেন পারুলিয়া ইউনিয়নের কাশিয়ানীর শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়না বেগম। তবে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে হঠাৎই তার ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ইউপি অফিসের কাগজ-কলমে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি ‘মারা’ গেছেন।

আয়না বেগম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাকে মৃত উল্লেখ করে সমাজসেবা অধিদফতরে প্রত্যয়নপত্র জমা দিয়েছেন পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। এতে স্বাক্ষর করেন ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য আসমা বেগম। অভিযোগ রয়েছে, অর্থের বিনিময়ে ভুক্তভোগীর ভাতা কার্ড দিয়ে দেয়া হয়েছে অন্যজনকে। আয়না বেগমের অভিযোগ, এ বিষয়ে সমাধান চাইতে গেলে তাকে হুমকি-ধমকি দেয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নামে মামলা করেছেন তিনি।

ভুক্তভোগী আয়না বেগম বলেন, আমি মরে গেছি লিখে আমার কার্ড কেটে দিয়েছে। এরপর এটা অন্য একজনকে দিয়ে দিয়েছে। বিচার চাইতে গিয়ে হুমকিধমকি শুনেছি।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। অভিযোগ- অর্থের বিনিময়ে আয়না বেগমের ভাতা অন্যজনকে দিয়েছেন অভিযুক্তরা। অনিয়মে জড়িতদের শাস্তির দাবিও তাদের। তবে অভিযোগের বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত দুই জনপ্রতিনিধি।

সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য আসমা বেগম এ বিষয়ে বলেন, এখন আর এসব নিয়ে বলার কিছু নেই। মামলা হয়েছে। এরপর যা হওয়ার সেটা সেখানেই হবে।

পারুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর থেকে তার বিষয়ে জানানো হয়েছিল। ওই নারীকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমিও খোঁজ নিয়ে পাচ্ছিলাম না। পরে সমাজসেবা অধিদফতর আমাকে প্রত্যয়ন দিতে বাধ্য করেছে।

তবে দ্রুত আয়না বেগমের ভাতা ব্যবস্থা করা হবে জানিয়ে গোপালগঞ্জের সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, অফিস থেকে প্রত্যয়ন চেয়ে চাপ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা কেন চাপ দেবো? কেউ মারা গেলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান লিখিত দেন। এরপর সে অনুযায়ী অধিদফতর ব্যবস্থা নেয়।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply