ফেসবুকের ওয়ালে একটি আর্ট নিয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে সবাইকে। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত থেকে এটি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যাদের শৈশব-কৈশোর ৯০ দশকে, তারা অনায়াসে রিলেট করতে পারছেন এই চিত্রটির সঙ্গে। কয়েক টুকরো সুখস্মৃতির সঙ্গে নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছেন তারা। কেননা, ছবিটিতে রয়েছে বিংশ শতাব্দীর ৯০ দশক থেকে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের বেশ কিছু চরিত্র। অর্থাৎ সেই সময়ের জনপ্রিয় তারকা, অভিনেতা, লেখক, গায়ক, কার্টুন চরিত্রসহ অনেকেই অঙ্কিত হয়েছে ছবিটিতে।
যে ছবি নিয়ে এতো আলোচনা, এতো স্মৃতি রোমন্থন, সেই ছবিটি এঁকেছেন জাহিদুল হক অপু (আরজে অপু)। এই ছবিটি তার ব্যাচ পুনর্মিলনের ম্যাগাজিনের জন্য তৈরি করেছেন তিনি।
আপনি যদি ‘নাইনটিজ কিড’দের একজন হন, ছবির প্রতিটা চরিত্র আপনার চেনার কথা। সেই সময়ের তুমুল জনপ্রিয় ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের বাকের ভাইকে দেখলে আপনার গুনগুন করার কথা– ‘হাওয়ামে উড়তা যায়ে, মেরা লাল দোপাট্টা মাল মাল কা হোজি.. হো জি’। যদি আপনি ভিডিও গেমসের অনুরাগী হন, আপনি নিমিষেই চিনবেন ‘ক্যাডিলাকস অ্যান্ড ডাইনোসরস’-এর মোস্তফা বা হান্নাকে। যারা কম্পিউটার চেনার আগেই চিনেছিল এদের। চিনেছিল চাচা চৌধুরীকে। কারণ, ‘চাচা চৌধুরীর মস্তিষ্ক কম্পিউটারের চেয়েও প্রখর’।
কি নেই এই ছবিতে! মীনা-রাজু থেকে শুরু করে আছে আলিফ লায়লার চরিত্র ‘সিনবাদ’। ‘ক্যাপ্টেন প্ল্যানেট, হি ইজ আ হিরো’ এমন গানও আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবে এই ছবি। আছে তিন গোয়েন্দা কিশোর-মুসা-রবিন। আছেন লেখক-পরিচালক হুমায়ূন আহমেদ, ‘ইত্যাদি’র হানিফ সংকেত। আরও রয়েছে জনপ্রিয় রক মিউজিশিয়ান আইয়ুব বাচ্চু-জেমসসহ অনেকেই।
যারা রাত ৯টা বাজলেই বিটিভি খুলে বসে থাকতো, যারা ‘মি. বিন’ কিংবা ‘দ্য এ টিম’ দেখার জন্য পাশের বাড়ির ফুটফরমাশ খাটতো। স্কুলের করিডরে মাইকেল জ্যাকসনের ‘মুন ওয়াক’ অনুকরণের চেষ্টা করতো, যারা ম্যাকগাইভারকে দেখে বড় হয়ে একটা ‘সুইস নাইফ’ কেনার স্বপ্ন দেখতো– ছবিটির মর্ম মূলত তাদেরই বোঝার কথা।
ছবিটি প্রসঙ্গে অপু বলেন, এই ছবির মাধ্যমে নব্বইয়ের রঙিন পপ কালচারটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমরা যাদের দেখেছি, যাদের কারণে আমাদের চিন্তার জগত পরিবর্তিত হয়েছে, যে চরিত্রগুলো দেখে আমরা নস্টালজিক হই, তাদের আঁকার চেষ্টা করেছি। ছবিটা সবাই এত পছন্দ করবে, ভাবতে পারিনি।
ছবিটি শেয়ার করেছেন পরিচালক আশফাক নিপুন। ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে তিনি লিখেছেন, আমার পুরো শৈশব ও কৈশোরকে খুব সুন্দরভাবে আঁকিয়েছেন এবং সব একসঙ্গে করেছেন ট্যালেন্টেড অপু। ৯০-এর শিশু হওয়া কি এক দুর্দান্ত অনুভূতি!
/এএম
Leave a reply