১১ জন মিলে চেষ্টা, তবুও রান আউট ড্রামায় ব্যর্থ ফিল্ডাররা

|

মেহেদী হাসান রোমান

একজন ব্যাটারকে রান আউট করতে সর্বোচ্চ কতজন ফিল্ডারের সরাসরি অংশগ্রহণ থাকে? সর্বোচ্চ দুই কিংবা তিন। কিন্তু যখন ১১ জন মিলেও নিশ্চিত রান আউট হতে যাওয়া ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরাতে ব্যর্থ হয়, তখন সেটি অবাক করা বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে একটি জুনিয়র ক্রিকেট টুর্নামেন্টে।

জন্টি রোডসের মতো ফিল্ডাররা অনায়সে সরাসরি থ্রো করে আউট করতেন, যেখানে ব্যাটারকে প্রান্ত বদল করার সময়ই দিতেন না। আবার দেখা যায়, ফিল্ডাররা বাউন্ডারি লাইন থেকে বল কুড়িয়ে ব্যাটারদের ডাবল কিংবা তার বেশি রান নিতে আটকানোর জন্য বোলার অথবা উইকেটকিপারের হাতে বল পাঠাতেন। তারা ব্যাটারকে রানআউট করতো। অবশ্য আরও ম্যাজিকময় রান আউট আছে, যেখানে ফিল্ডার বল পাঠিয়ে সার্কেলের ভেতর কাওকে ক্যাচ দেয়, সেই ফিল্ডার দূর থেকে সরাসরি স্ট্যাম্পে আঘাত হানে।

সম্প্রতি ইংলিশ আম্পায়ার রিচার্ড কেটলবরো সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ক্লিপ শেয়ার করেছেন, যা ইতোমধ্যে ভাইরাল। তিনি ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখেন, ক্রিকেটে বিলিয়ন মুহুর্তের মধ্যে একটি। এটি আগে কখনও দেখিনি। ম্যাচটি স্পেশালাইজড ক্রিকেট ক্লিনিক বনাম সানরাইজ ক্রিকেট স্কুলের মধ্যকার ভারতের অনূর্ধ্ব-১২’র একটি টুর্নামেন্টের।

রিচার্ড কেটলবরোর এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) প্রকাশ করা সেই ভাইরাল ভিডিওটি।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, কার্তিক নামের ব্যাটার মিড-অনের দিকে একটি শট খেলে। কিন্তু সে নন-স্ট্রাইকার ব্যাটার গায়কোয়াড়ের দিকে নজর না দিয়েই সিঙ্গেল নেয়ার জন্য প্রান্ত বদল করতে থাকে। দুই ব্যাটারের ভুল বোঝাবুঝির ফলে এক পর্যায়ে উভয় ব্যাটারই বোলার প্রান্তের দিকে আটকা পড়ে। মজার ব্যাপার হলো, নন-স্ট্রাইক ব্যাটার গায়কোয়াড় তার দাগ থেকে বেরই হয় না, কারণ সে একবার দাগ থেকে বের হয়ে গেলে অপর প্রান্তে না পৌঁছালে সে আউট হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে রান আউট না করতে পারার কোনো কারণ নেই। তবে দেখা যায়, মিড-অন ফিল্ডার নন-স্ট্রাইকার স্টাম্পের দিকে প্রথম থ্রো মিস করেন। বল ফিরে পাওয়ার পর আরেকজন ফিল্ডার কাছাকাছি থেকে দ্বিতীয় থ্রো মিস করেন। এরপর তৃতীয় থ্রোতেও একই কাণ্ড ঘটায় ফিল্ডাররা। এরমধ্যে বল ডেলিভারির সময় স্ট্রাইক প্রান্তের ব্যাটার নিরাপদে ফিরে আসে তার আগের স্থানে। ভিডিওটির ১৯ সেকেন্ডের সময় ফ্রেমে ফিল্ডিং দলের ১১ জনকে একসাথে দেখা যায় যা হাস্যকর।

এরকম ঘটনা এর আগেও অনেকবার ঘটেছে, তবে দলের সবাই মিলে ৩০ মিটার সার্কেলের ভেতর এভাবে বলের পেছনে একজোট হয়ে ছোটেননি। যেমন, আইপিএলে একবার দেখা গিয়েছিলো ডেকান চার্জার্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচে। তবে চেন্নাইয়ের ১১ ফিল্ডার মিলে রান আউট মিসের হাস্যকর পরিস্থিতি তৈরি করেনি।

সেই ভিডিওটি অনেকে শেয়ার (রিটুইট) করেছেন। কেউ লিখেছেন, এটা আমাকে আমির খানের ‘লাগান’ সিনেমার কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে সব ফিল্ডার বলের দিকে দৌঁড়াতেন। আরেকজন লিখেছেন, ক্যাপ পড়া ফিল্ডারটি যিনি রান আউট মিস করলেন, তাকে অনেকটা শ্রেয়াস আইয়ারের মতো লাগলো।

এদিকে, ভিডিও শেয়ার করা সেই আম্পায়ার রিচার্ড কেটলবরোও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটি মজার ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন। পুনেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচে ৯৭ রানে ব্যাট করছিলেন ভিরাট কোহলি। ম্যাচ জেতার জন্য দরকার ছিলো ১ রান। সেই মুহূর্তে নাসুম আহমেদ বিশাল একটি ওয়াইড বল করেন। তবে রিচার্ড সেটিকে ওয়াইড হিসেবে ধরেননি। পরের বলেই ভিরাট ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। পেয়ে যায় নিজের ৪৮ তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। অথচ নাসুমের বলটিকে ওয়াইড ধরলে ভারতের জেতার জন্য আর রান প্রয়োজন থাকতো না, তবে মিস করতেন শতক। সেই ঘটনা নিয়েও নেটিজেনরা মিমস, ট্রলে মেতেছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবারও আম্পায়ার হিসেবে মাঠে দেখা দেবেন রিচার্ড কেটলবরো।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply