স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফেনী:
ফেনীতে বৃষ্টি হওয়ায় বন্যার উন্নতি হওয়া ৩টি উপজেলাসহ ৬ উপজেলায় এখন বাড়তি আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃষ্টি বন্ধ হয়ে পানি কমায় কিছুটা স্বস্তির হাসি মুহূর্তেই ফিকে হয়ে গেছে বানভাসী মানুষের। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা সাগর সমান আতঙ্ক তৈরি করছে বাসিন্দাদের মনে। আশ্রয় কেন্দ্র, ঘরের ছাদ, গাছের ডাল, ঘরের চিলেকোঠায় কিংবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মানুষ পানি নামার প্রহর গুনছেন।
ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞার বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। সড়ক যোগাযোগ ৫ দিন ধরে বন্ধ। চলার মাধ্যম ভেলা আর নৌকা।
বাসিন্দারা জানান, বাংলাদেশের বৃষ্টির সাথে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করলে বানভাসী মানুষের ভোগান্তি আরও দ্বিগুণ হবে।
ফেনী শহর, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বন্যার কিছুটা উন্নতি হলেও সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও ভোগান্তিতে পড়েছে সদরের ১২ ইউনিয়ন, সোনাগাজীর ৯ ও দাগনভূঞার ৮ ইউনিয়ন। প্রতিটি এলাকায় চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি। খাবার, চিকিৎসা সংকটে থাকা মানুষের মোবাইল নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সহযোগিতা নিতে পারছে না। শিশু বৃদ্ধ নারী সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে।
দাগনভূঞা থানার নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, দাগনভূঞার সিন্দুরপুর রাজাপুর জায়লস্কর ইউনিয়নে এখনও ১২ ফুট পানি। ঘরের চালা পর্যন্ত পানি। সেখানে মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।
বানভাসীদের অভিযোগ, জেলা শহরের সাথে সংযুক্ত প্রধান সড়কগুলোতে ত্রাণ গেলেও যাচ্ছে না একদম গ্রামীণ জনপদে। ত্রাণের চেহারাও দেখেনি এমন অনেক গ্রাম রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আটকে থাকা অনেক বাসিন্দা চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার জানিয়েছেন, ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এরমধ্যে দেড়লাখ মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। বানভাসী মানুষদের খাবার পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার যোগে খাওয়ার দেয়া হচ্ছে। জেলায় একটি ও এবং ৬ উপজেলায় ৬টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি ৭টি হাসপাতালে মেডিকেল ক্যাম্প চালু রয়েছে।
/এটিএম
Leave a reply