আখাউড়া করেসপনডেন্ট:
ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী উপজেলা আখাউড়ায় বছরের প্রথম দিনেই জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পূর্বাঞ্চলের জনজীবন। ঘনকুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়ায় শীতকষ্টে বিপাকে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা।
বিদায়ী বছরের শেষ দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে সীমান্তবর্তী আখাউড়াঞ্চলে। তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ার সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন ছাড়াও পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী সবধরনের ট্রেন হেডলাইট জ্বালিয়ে সতর্কতার সাথে যাতায়াত করছে।
নিতান্তই প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষের দেখা মিলছে পথে-ঘাটে। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ভবঘুরে কিংবা শ্রমজীবী ও গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে বিপদে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো দিয়ে আগুনের কুণ্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ উপজেলা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়বেষ্টিত ত্রিপুরা রাজ্যের নিকটবর্তী সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় তুলমূলক শীতের তীব্রতাও এখানে বেশি থাকে। কনকনে ঠান্ডায় কষ্টে পড়েছে এ অঞ্চলের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষগুলো।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দিনের বেলায় এক মূহুর্তের জন্যও দেখা মিলেনি সূর্যের। রাস্তাঘাটে লোকের চলাচল অনেক কম, জরুরি কাজ ছাড়া মানুষজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। অনেকে জীবিকার তাগিদে বের হলেও সংখ্যায় তা নগন্য।
আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা মেলে ভবঘুরে এক নারীকে। তার নাম আম্বিয়া বেগম। তিনি বলেন, আজকা হঠাৎ কইরা শীত পরছে, খুব ঠান্ডা লাগতাছে, এ রকম ঠান্ডা পড়তে থাকলে মইরা যামুগা। ইস! এ শীতে যদি কেউ একটা কম্বল দিতো।
সংসারের ভরণপোষণের চিন্তায় শীতকে উপেক্ষা করে ইজিবাইক নিয়ে সকালে বের হন চালক খোরশেদ আলম।তিনি বলেন, ঘন কুয়াশা আর শীতের দাপটের কারণে কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। মানুষজন চলাফেরা না করায় আয়-রোজগারও কমে গেছে। ফলে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু, বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হিমেল খান বলেন, এ অঞ্চলে হঠাৎ করে শীতের দাপট বেড়েছে। এতে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন, হাসপাতালে ভর্তিও আছেন।
/এমএইচ
Leave a reply