মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে গিয়ে তাদের জমি, ফসল ফেরত পাবেন এমন সম্ভবনা ক্ষীণ। রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তা ও রয়টার্স প্রতিবেদকের বরাতে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা যদি দেশে ফেরত যেতে পারেন, তারা দেখবেন তাদের জমি দখল হয়ে গেছে, ফসল সরকারের গোলায় চলে গেছে এবং বিক্রি হয়ে গেছে।
২৫ আগস্টের পর থেকে অন্তত ৬ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার ত্যাগ করেছে। নিঃসন্দেহে এদের প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াটি জটিল হবে। রয়টার্স মিয়ানমারের ৬ জন সামরিক কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছে যারা প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত। এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা চূড়ান্ত না হলেও তাদের কথা থেকে জানা গেছে সরকার সু চি’র করা ‘প্রত্যাবাসন অঙ্গীকার’ বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। যদি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়েই নিতে হয় তবে রাখাইনে নতুন ‘মডেল ভিলেজ’ তৈরি করে সেখানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে ইচ্ছুক দেশটির সরকার।
উত্তর রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ৭১ হাজার ৫০০ একর ধানের আবাদ করা জমি ফেলে পালিয়ে এসেছিল। জানুয়ারি মাসে এর ফসল তোলার কথা। দেশটির রাষ্ট্রীয় মন্ত্রী চিও লুইন অবশ্য বলছেন, মালিকানাবিহীন ৪৫ হাজার একর ফসলি জমি বাঙালিরা ফেলে গেছে।
ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের যে সকল এলাকা মিয়ানমার সেনাবাহিনী দখল করে নিয়েছে, এই মাসের শেষ নাগাদ সেখানকার ফসল কেটে নেয়া হবে। এজন্য দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমান বাজারমূল্যে, এক একর জমির ধান বিক্রি করে ৩০০ ডলার আয় করতে পারে মিয়ানমার। অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা ধান বেচে রাষ্ট্রটি মিলিয়ন ডলার আয় করতে যাচ্ছে!
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেন, সরকারের নিদেনপক্ষে এটা নিশ্চিত করা উচিত এই ধানগুলো লাভের জন্য ব্যয় না হয়ে মানবিক সহায়তার জন্য ব্যয় হবে।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply