সুপার মাকের্টে গিয়েছেন এমপি। ক্ষুধা লাগায় একটা স্যান্ডউইচের অর্ডার দিতে চেয়েছিলেন। দোকানের কর্মচারি একটু ব্যস্ ছিলেন। ফলে এমপি একাধিকবার তাকে স্যান্ডউইচের কথা বললেও তিনি শুনেননি। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বিরক্ত নেতা এক পর্যায়ে নিজের হাত লাগিয়ে স্যান্ডউইচ খেয়ে বিল না দিয়েই চলে যান! দোকান থেকে চলে যাওয়ার পর মেজাজ ঠিক হয়। একটু পরে নিজেই ফিরে আসেন বিল দেয়ার জন্য।
পরে গল্পোচ্ছলে সহকর্মীদের কাছে ঘটনা বলার পর তা প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। এবং স্যান্ডউইচ খেয়ে বিল না দেয়ার বিষয়টিকে ‘চুরি’ হিসেবে গণ্য হয় সাধারণের কাছে। শেষমেশ এই ক্ষুদ্র চুরির অভিযোগেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ মধ্য ইউরোপের দেশ স্লোভেনিয়ায়। পদত্যাগী পার্লামেন্ট সদস্য বা এমপির নাম দারি ক্রাজিক (৫৪)। তিনি স্লোভেনিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক দল মারিয়ান সারেজ লিস্টের (এলএমএস) নেতা। গত বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
দারি ক্রাজিকের আচরণকে নৈতিকতার স্খলন হিসেবে দেখেছে তার দল।
ক্রাজিক স্লোভেনিয়ার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল পপ টিভিকে বলেন, তিনি সুপারশপের কাউন্টারে তিন মিনিট অপেক্ষা করেও কোনো কর্মীকে পাননি। অথচ সুপারশপে তখন তিনজন কর্মী ছিলেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে গল্পে এতটাই মশগুল ছিলেন যে গ্রাহকের দিকে খেয়ালই করছিলেন না। ক্রাজিকের ভাষ্যমতে, সুপারশপের কর্মীরা তাঁকে পাত্তা দেননি। এতে বিরক্ত হয়ে তিনি স্যান্ডউইচের দাম না দিয়েই চলে যান।
বিবিসির খবরে বলা হয়, গত বুধবার পার্লামেন্টারি কমিটির এক বৈঠকে হাস্যোচ্ছলে সুপারশপের ঘটনার কথাটি বলেন দারি ক্রাজিক। তাঁর সহকর্মীরাও ঘটনাটি শুনে বেশ মজা পান এবং হাসাহাসি করেন। কিন্তু পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর ক্রাজিকের দল এলএমএসের পার্লামেন্টারি অংশের প্রধান ব্রেনি গোলুবোভিচ ওই আচরণের নিন্দা জানান। তিনি এই ধরনের কাজকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ অভিহিত করে বলেন, সাংসদ হিসেবে ক্রাজিকের দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেওয়া উচিত ছিল। এলএমএসের উচ্চ নৈতিক মানদণ্ডের কথাও মাথায় রাখা উচিত ছিল তার। ঘটনা বেগতিক দেখে ক্রাজিক দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে পার্লামেন্টের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
Leave a reply