তীব্র পানি সংকটে ভুগছে নগরীর জুরাইন-মুরাদপুরের বাসিন্দারা। এ ছাড়াও দুর্গন্ধের কারণে পান অযোগ্য হয়ে পড়েছে এ এলাকার পানি। শুধু তাই নয়, পানির সঙ্গে আসছে আবর্জনাও।
পানির রঙ গাঢ় লালচে হওয়ায় তা দিয়ে ধোয়ামোছার কাজও করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে পানি কিনে ব্যবহার করছেন এসব এলাকার অনেক বাসিন্দা। রমজান মাসে বিশুদ্ধ পানির সংকট ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী বলেন, পানি নিয়ে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। পানিতে ময়লা আসে। পানির স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে গাঢ় লালচে দেখাচ্ছে। এই পানি ব্যবহারে শরীরে নানান সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।
মুরাদপুরের বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, লাইনের পানি খাওয়া তো যায়ই না, গোসল করলে নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। শরীর চুলকায়। চুল আঠালো হয়ে পড়ে। প্রতিদিন শ্যাম্পু করার পরও চুলের আঠালো ভাব দূর হয় না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুরাদপুর ও তার আশপাশের কোনো কোনো এলাকায় ওয়াসার লাইনে তিন-চার দিন পানি আসে না।
কোথাও কোথাও আবার ওয়াসার পানির লাইনে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত বিরতিতে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে; যার ফলে পানির সংকট লেগেই আছে। এসব এলাকার লোকজন দফায় দফায় পানির সংকটের কথা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে জানালেও সেই সংকট থেকে মুক্তি মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
ময়লা ও ফেনাযুক্ত ঘন কালো ঘোলাটে পানির সঙ্গে কেঁচোসহ নানা পোকা মাকড় পাওয়া যাচ্ছে। এক দিকে সংকট তার ওপর দুর্গন্ধযুক্ত পানি নগর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ফুটিয়েও পানযোগ্য করা যাচ্ছে না পানি।
ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে বেশ কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মের সময় সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। বর্তমানে পানি সংকটের চেয়ে দূষণের বিষয়টি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন সময় জুরাইন-মুরাদপুর ও আশপাশের এলাকায় বিশুদ্ধ পানির দাবিতে রাস্তা অবরোধ, গাড়ি ভাংচুর, বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। কিন্তু পানি সংকটের কোনো সুরাহা হয়নি।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বছরে মার্চ থেকে মে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট বেড়ে যায়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা শহরে দিনে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন লিটার পানি দরকার।
কিন্তু ১ দশমিক ৯ থেকে ২ বিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর ৩ ফুট করে নিচে নামছে। এর ফলে পানিস্বল্পতা বাড়ছে।
ঢাকা ওয়াসা মডস জোন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন বলেন, বছরের এ সময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানির চাহিদা বেড়ে যায়। আগে এ সময়টায় পানি সংকট ছিল। তবে এখন সংকটের পরিমাণ কমে আসছে।
পানিতে দুর্গন্ধ কমানোর জন্য অবৈধ লাইন বন্ধসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা এটা করছি।
Leave a reply