পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
৬ হাজার টাকার বিনিময়ে সিজারিয়ান হবে সেই শর্তে ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু নরমাল ডেলিভেরি হওয়ায় সিজারিয়ানের প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু তাতে কী? কথা ছিল ৬ হাজার টাকার এখন সেই টাকার সম্পূর্ণটাই দিতে হবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে। ৬ হাজার টাকা না দেয়ায় প্রসূতি মাসহ তাদের অভিভাবককে আটকে রাখল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পটুয়াখালীর বহুল বিতর্কিত ও আলোচিত “হিমি পলি ক্লিনিকে” এ ঘটনা ঘটেছে।
পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠি মৃধা বাড়ি রিয়াজ মৃধার স্ত্রী লিমা বেগম। তার স্বামী রিয়াজ মৃধা জানান, এই আমাদের প্রথম সন্তান। গত ৩০ জুন বিকেল ৪টার দিকে স্ত্রীর (লিমার) প্রসব বেদনা ওঠায় বাড়ি থেকে সিজারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ছয় হাজার টাকা চুক্তিতে শহরের হিমি পলি ক্লিনিকে ভর্তি করি। ওই দিন বিকেল ৫ টায় নরমাল ডেলিভারিতে বাবু জন্মগ্রহণ করে।
তিনি আরও জানান, নরমাল ডেলিভারি হওয়ায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ক্লিনিকের লোকজন প্রথমে বলে রোগীর রক্ত লাগবে। পরে বলে না ঔষধ লাগবে। এভাবে কতক্ষণ নয়-ছয় কথা বলে রাতে ক্লিনিকে থাকতে বাধ্য করলো। আজ সকালে ক্লিনিক থেকে নাম কেটে বাড়ি যাবার জন্য কাউন্টারে গেলে সিজারের ছয় হাজার টাকা খরচ দাবি করে ১টি রশিদ ধরিয়ে দেয়।
তিনি আরও জানান, আমি কাউন্টারে আমার বৌয়ের কোন সিজার লাগেনি বলে জানালে তারা উল্টাপাল্টা কথা বলে আমাদের আটকে রাখে। পরে ক্লিনিক কতৃপক্ষ বলে, দাবীকৃত ছয় হাজার টাকা না দিলে তাদের ছাড়পত্র দূরের কথা বাড়ি যেতে দেয়া হবেনা। পরে কোন উপায় না পেয়ে আমার মামাতো ভাই পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের অফিস সহকারী সোহেলকে বিস্তারিত জানাই।
পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের অফিস সহকারী সোহেল জানান, বিষয়টি সে তার অফিসের সিনিয়রদের জানানোর পরে তারা (ক্লিনিক কতৃপক্ষ) তিন হাজার টাকা রেখে রোগী রিলিজ দিয়ে দেয়। সোহেল জানায়, আমি বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছি বলে ওরা (ক্লিনিক কতৃপক্ষ) রোগীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে ও গালিগালাজ করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিতর্কিত হিমি পলি ক্লিনিকের ম্যানেজার লিটন জানান, রোগী আটকে রাখার কোন বিষয় এখানে ঘটেনি। সাংবাদিক ভাই কল দেবার পরে ডাক্তার স্যারের সাথে কথা বলে আমি কাউন্টারে জানিয়েছি রোগি যে টাকা নিয়ে আসছে সেই টাকা রেখে রোগী ছেড়ে দাও। এর আগেও ওই ক্লিনিকে চিকিৎসার অবহেলায় রোগী মৃত্যু এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। সিনিয়র সংবাদকর্মী জালাল আহমেদ জানান, এসব ক্লিনিক গরীব মানুষকে জিম্মি করে সিজার করাতে বাধ্য করছে। বিষয়টি প্রশাসনের তদারকি করা প্রয়োজন।
Leave a reply