বাঁধ ভাঙার প্রত্যাশায় ফ্রান্সে কোয়ারেন্টাইন করছেন সাদ-বাঁধনরা

|

কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪-তম আসর বসছে আগামী ৬ জুলাই। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র হিসেবে প্রথমবারের মতো কানের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়াম নূর’। উৎসবে অংশ নিতে পরিচালক সাদ ও অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন সহ ৭ কলাকুশলী এরইমধ্যে ফ্রান্স পৌঁছেছেন। বিধি মেনে আছেন কোয়ারেন্টাইনে। হোটেলের পরিবর্তে একটি বাসা ভাড়া করে কাটাচ্ছেন কোয়ারেন্টাইন। যমুনা নিউজকে অভিনেত্রী বাঁধন জানালেন এসব তথ্য। চাপা রাখলেন না বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই আসরে অংশ নেয়ার উচ্ছ্বাসও। 

বাঁধন বলেন, এখানে আসতে পরিচালকসহ পোস্ট প্রোডাকশন সংশ্লিষ্টদের অনেক কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় পুরো দল এখনও ফ্রান্সে পৌঁছাতে পারেনি। তবে এখন আমরা প্যারিসের অদূরেই একটি বাসায় অবস্থান করছি। যেহেতু ১০ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তাই আমরা ভাবছি যতটা বেশি সম্ভব কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করা যায়। হোটেলে এতদিন থাকাটা কষ্টকর হতো বলে আমরা একটি বাসা ভাড়া করেছি। নিজেরাই রান্না করে খাবো। বাসার পেছনে ফুটবল খেলার পরিকল্পনাও চলছে।

কানের মতো বিশ্বনন্দিত চলচ্চিত্রে উৎসবে অংশ নেয়া জীবনের এক পরম অভিজ্ঞতা বলে মনে করেন এই অভিনেত্রী। বললেন, এটা অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম, এখানে আসতে পারাটা আমার জন্য খুবই আনন্দের, কারণ বিশ্বের বড় বড় পরিচালক-প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশি সিনেমাকে চিনবেন ও দেখবেন। অবশ্যই ভয় ও চাপ অনুভব করছি, যত দিন আগাচ্ছে ভয়টা বাড়ছে।

বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, এটা আমাদের বিশেষ করে আমার জন্য একদমই নতুন অভিজ্ঞতা। আশা করছি ভালো কিছু হবে। বাংলাদেশের সিনেমা সম্পর্কে বিশ্ব নতুনভাবে জানবে আশা রাখি। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি, এটা ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য অনেক বড় গর্বের ব্যাপার।

ফ্রান্সে টিমমেটদের সাথে তোলা কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন বাঁধন। যথারীতি ক্যামেরার পেছনের কারিগর সাদের অনুপস্থিতি এসব ছবিতেও। জানা গেল, ক্যামেরা এড়িয়ে চলা সাদই তুলে দিয়েছেন ছবি।

কানে’র ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে বিশ্বের ১৫টি দেশের সর্বমোট ১৮টি চলচ্চিত্র। প্রতিভাবান ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ পরিচালকদের পরিচয় করিয়ে দিতে ১৯৭৮ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে এই বিভাগটি চালু হয়। বিজয়ী সেরা ছবিকে দেওয়া হয় ৩০ হাজার ইউরো। এই বিভাগেই প্রতিযোগিতা করছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। কানে যাওয়া চলচ্চিত্রটির প্রতিনিধি দলে সাদ-বাঁধন ছাড়াও রয়েছেন নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক বাবু, সিনেমাটোগ্রাফার তুহিন তামিজুল, প্রডাকশন ডিজাইনার আলী আফজাল উজ্জল, কালারিস্ট চিন্ময় রায় ও সাউন্ড ডিজাইনার শৈব তালুকদার।

শেষ পর্যন্ত বাঁধনদের উচ্ছ্বাস দেশের বাঁধ ভেঙে আরও কতদূর গড়ায় সেটি দেখার অপেক্ষায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। তবে, কান পর্যন্ত পৌঁছতে পারা নিঃসন্দেহে বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য একটি বড় সংযোজন।

 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply