স্টাফ করেসপনডেন্ট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চাঁদা না দেয়ায় এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সৌদি প্রবাসী মো. দুলাল মিয়া। গত ২ জানুয়ারি দুলালের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্তী।
জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের লোকনাথ দিঘিরপাড়ের বাসিন্দা দুলাল মিয়া দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে সৌদি আরব প্রবাসী। ইতোপূর্বে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শ্রেষ্ঠ রেমিট্যান্স প্রদানকারী হিসেবে জেলা প্রশাসনের সম্মাননাও পেয়েছেন। ২০১৮ সালে তিনি ছুটিতে দেশে এসে পূর্বপাইকপাড়া এলাকার রামঠাকুর মন্দিরের পশ্চিমপাশে ২.৮২ শতাংশ জায়গার ওপর একটি দুইতলা ভবন ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ১২ বছর আগে করা ওই ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন করার উদ্যোগ নেন প্রবাসী দুলাল। তবে, দুলালের ওই জমির পাশে ৮১ শতাংশের একটি মজা পুকুর থাকায় পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুরুল আমিন সরেজমিন পরিদর্শন করে জানান, পুকুরের ৬০০ বর্গফুট জায়গা ভরাট করা হয়েছে। দুলালের জমির পাশে আরও তিনটি ভবন মালিকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়। তবে এর পাশে আরও ৫-৬টি ভবন থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, পরিবেশ অধিদফতরের আনা পুকুর ভরাটের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভরাটকৃত জায়গা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেন দুলাল। এরপরও অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরবর্তীতে জরিমানা দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। কিন্তু এরপরও উপ-পরিচালক নুরুল আমিন নানাভাবে দুলালকে হয়রানি করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুলালের কাছে নিজের বাড়ির একটি মসজিদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দেয়ার প্রস্তাব দেন নুরুল আমিন।
ভুক্তভোগী প্রবাসী দুলাল মিয়া জানান, পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ার পর সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্তীর মাধ্যমে এক লাখ টাকা দাবি করেন নুরুল আমিন। এই টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান তিনি। শেষ পর্যন্ত আমাকে হয়রানি করার জন্য পরিবেশ আইনে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে তারা। ঘটনাস্থলে না এসে, কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে করা এমন হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্তী বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে যদি এমন কোনো অভিযোগ জমা পড়ে থাকে, তাহলে তিনি নিশ্চই সেটি তদন্ত করে দেখবেন। আমি যেহেতু আমার বিভাগের মুখপাত্র না, এ ব্যাপারে নুরুল আমিন স্যারের সাথে আপনি কথা বলেন।
তবে প্রবাসীর অভিযোগটি বানোয়াট উল্লেখ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, পরিবেশ আইন বহির্ভূত হওয়ায় দুলাল মিয়াসহ আরও কয়েকজনের ভবন নির্মাণে বাধা দেয়া হয়েছে। সরেজমিন তদন্ত করে তাকে জরিমানা ও মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া আমার কোনো মসজিদ নেই।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
/এসএইচ
Leave a reply