রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে পাকিস্তান

|

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। ২৫ মার্চ অনুষ্ঠেয় এই অনাস্থা ভোটকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন পিটিআই নেতৃত্বাধীন জোট ভাঙ্গার চেষ্টা করছে বিরোধী শিবির। এরইমধ্যে বিদ্রোহ করেছেন ইমরানের দলের অন্তত ১০ এমপি। যদিও ইমরান প্রশাসনের দাবি, রুশ-ইউক্রেন সংঘাতে মস্কোর পক্ষ নেয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে পশ্চিমা শক্তি।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে প্রায় ২ দশকের লড়াই শেষে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতার আসনে বসেন ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কূটনৈতিক সংকট কমানো আর বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, চার বছরে তার বাস্তবায়ন হয়নি বেশিরভাগেরই। বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি আর অর্থনৈতিক পতনকে কেন্দ্র করে চাপ বাড়ছিল ইমরান খানের পিটিআই নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর। এ অবস্থার মধ্যেই কিছুদিন আগে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে শতাধিক বিরোধী সদস্য। প্রস্তাব পাস হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।

পাকিস্তানে ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টে সরকার গড়তে প্রয়োজন ১৭২ আসনের। সরকারকে সরাতেও দরকার একই সংখ্যক এমপির সমর্থন। অনাস্থা প্রস্তাব আনা বিরোধী এমপির সংখ্যা এই মুহূর্তে ১৬১। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন পিটিআইয়ের আছে ১৫৫ সদস্য। তাই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে ইমরান খানের জোটে ভাঙ্গন ধরানোর চেষ্টা বিরোধী জোটের। এরইমধ্যে পিটিআইর অন্তত ১০ এমপি বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়েছে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মনে করা হচ্ছে ২০১৮ সালে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে এটিই ইমরান খানের জন্য সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষা হয়ে উঠতে পারে। ইমরান খান তার দলত্যাগী এমপিদের পার্টিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ফিরে এলে তাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে- যেভাবে একজন পিতা তার সন্তানদের ক্ষমা করেন।

তবে প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে কেন পতনের মুখে ইমরান খানের সরকার। সংশ্লিষ্টদের দাবি, রুশ-ইউক্রেন সংঘাত ইস্যুতে মস্কোর পক্ষে অবস্থান নেয়াতেই পশ্চিমের তোপের মুখে পড়েছেন ইমরান। রাশিয়ার বিপক্ষে অবস্থান নিতে ইউরোপের ২২ দেশের পক্ষ থেকে লেখা চিঠির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনছেন ইমরান খান। ইমরান খান মনে করছেন তিনি যদি ক্ষমতা হারান তাহলে তিনি পশ্চিমাদের দোষারোপ করতে পারবেন। বলতে পারবেন, তার বিরুদ্ধে বাইরের শক্তি কাজ করছে। আর যদি টিকে যান তাহলে তিনি বোঝাতে পারবেন যে, পশ্চিমা শক্তিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পথ পাকাপোক্ত হবে।

২৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে অনাস্থা ভোট। যদি ইমরান খান টিকে গিয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেন, তাহলে তিনিই হবেন পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রী যিনি তার পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারলেন।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply