যুদ্ধে নাক গলানোর উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন জনসন; আরও যা বলছে রাশিয়া

|

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্যতম চর্চার ইস্যু বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তিনি। তারচেয়েও বেশি শোরগোল চলছে তার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী থাকাকে কেন্দ্র করে। অনেকেই তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে নাক গলানোর উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন এই রক্ষণশীল নেতা। অবশ্য বরাবরের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন ঢালাও সমর্থন দিচ্ছে এখনও।

গেলো কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ব্রিটেনের রাজনীতি। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে বৃহস্পতিবার অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিতে বাধ্য হলেন বরিস জনসন। প্রধানমন্ত্রী তো বটেই, ছাড়লেন কনজারভেটিভ পার্টি প্রধানের মসনদও। কিন্তু উত্তরসূরী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের ঘোষণাও দিয়ে রাখলেন।

ব্রিটিশ রাজনীতির এই উত্থান-পতনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। রাশিয়ার স্পষ্ট বক্তব্য, যুদ্ধে নাক গলাতে আসায় বরিসের এই পরিণতি। ব্রিটেনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন বলছেন, সম্প্রতি, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে বেশি মনোযোগ দিয়ে ফেলেছিলেন বরিস জনসন। বিশেষভাবে নিজ দেশের জনগণ এবং অর্থনীতি যখন টালমাটাল অবস্থায়, সেসময় ইউক্রেন যুদ্ধের মতো জটিল ইস্যু নিয়ে মাথা ঘামানো ঠিক হয়নি তার। তারই ফলাফল এই পদচ্যুতি।

অবশ্য জনসনের প্রতি এখনও অগাধ বিশ্বাস মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের। হোয়াইট হাউস মুখপাত্র ক্যারিন জিন পিয়েরে বলছেন, আমাদের সাথে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের কোনো অবনতি ঘটবে না। ন্যাটো আর জি-সেভেন সম্মেলনে দুই রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাক্ষাৎ হয়েছিল। তারা সম্মিলিতভাবে সামরিক জোটের উন্নয়ন এবং ইউক্রেনকে সহযোগিতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুতরাং ক্ষমতায় রদবদল ঘটলেও পরিবর্তন আসবে না প্রতিশ্রুতিতে।

আর ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলছেন, বরিস জনসনের সাথে কথা বলে ধন্যবাদ জানিয়েছি। কারণ রুশ আগ্রাসনের প্রথমদিন থেকেই স্টিংগার্স, অ্যান্টি ট্যাংক সিস্টেম- এনএলএডব্লিউ, গোলাবারুদ ও সামরিক যান দিয়ে সহযোগিতা করেছে তার সরকার। তাছাড়া রাজনৈতিক সমর্থন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ভোলার মতো নয়।

বিশ্লেষকদের অভিমত, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবেও বরিস জনসনের টেকা দায়। কেননা, তার নিরপেক্ষতা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।

কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম ব্যালে মনে করেন, কনজারভেটিভ পার্টির জন্য স্বস্তি বয়ে আনছে এই পদত্যাগ। কারণ, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে রীতিমতো ফাটল ধরিয়ে দিয়েছেন বরিস জনসন। আর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর পদেও তিনি উপযুক্ত নন। তার নিপেক্ষতা নিয়ে দলের ভেতরেই রয়েছে কোন্দল। তাহলে বিরোধীরা কেন মানবেন তাকে?

বলা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচিত হবেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান। আর সেপ্টেম্বর নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে সাধারণ নির্বাচন।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply