টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও আগেই নিশ্চিত হয়েছিল জিম্বাবুয়ের সিরিজ জয়। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটি টাইগারদের জন্য ছিল তাই ধবলধোলাই এড়ানোর। এ যাত্রায় সেই পরীক্ষায় উৎরে গেছে তামিম ইকবালের দল। এই ম্যাচেও টস ভাগ্যে পরাজিত বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয় ১০৫ রানের ব্যবধানে।
প্রথমে ব্যাট করে এনামুল হক বিজয় ও আফিফ হোসেনের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে স্কোরবোর্ডে ২৫৬ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ১৫১ রানে থামে জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
২৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। পেসার হাসান মাহমুদের ইনসুইঙ্গারে এলবইডব্লিউ হয়ে ফেরেন তাকুদোয়ানাশে কাইতানো। এর পরের ওভারে আক্রমণে এসেই তাদিওয়ানাশে মুরামানিকে বোল্ড করেন মেহেদী মিরাজ।
এরপর প্রথম পরিবর্তিত বোলার হিসেবে আক্রমণে আসেন এ ম্যাচেই ওয়ানডেতে অভিষিক্ত এবাদত হোসেন। দ্বিতীয় ওভার করতে এসেই এই ফাস্ট বোলারের হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে বোকা বনে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন ১ রান করা ওয়েসলি মাধেভেরে। ১৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। আর সিকান্দার রাজার তো এমন উপলক্ষই পছন্দ! কিন্তু এবার আর বীরত্ব দেখানোর সুযোগই পেলেন না এই ম্যাচে জিম্বাবুয়ের অধিনায়কত্ব করা এই অলরাউন্ডার। এবাদতের ফুল লেন্থ ইনসুইঙ্গারে প্লেইড অন হয়ে গোল্ডেন ডাক জোটে এই ইনফর্ম ব্যাটারের উইলোতে।
এরপর ইনোসেন্ট কাইয়াকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে জিম্বাবুয়ের দুর্দশা আরও ঘনীভূত করেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় টনি মায়োঙ্গাকে স্পিন ধাঁধায় ফেলেন তাইজুল। ৪৯ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে। এক পর্যায়ে ৮৩ রানেই হারিয়ে ফেলে ৯ উইকেট। তবে, শেষ উইকেট জুটিতে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে দুই লেজের ব্যাটার রিচার্ড নাগারাভা ও ভিক্টর নিয়াচি। দুজনে মিলে গড়েন ৬৮ রানের জুটি। তবে তাতে হার এড়ানো যায়নি। বাংলাদেশের হয়ে চার উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুইটি করে উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন।
এর আগে, প্রথম ইনিংসে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করে বাংলাদেশ। পুরো ইনিংসে আফিফের অপরাজিত ৮৫ ও এনামুল বিজয়ের ৭৬ রান ছাড়া উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি কেউই।
ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। বিজয়ের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে
ব্যক্তিগত ১৯ রানে রানআউটে কাটা পড়েন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তামিমের পর দ্রুতই ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে বিজয় ৭৭ রানের জুটি গড়লেও রিয়াদের ইনিংস ছিল অত্যন্ত ধীরগতির। ৪টি ছয় ও ৬টি চারের সাহায্যে ৭০ বলে ৭৬ রান করেছেন বিজয়। আর ৫০’র আশেপাশে স্ট্রাইক রেট নিয়ে ব্যাট চালানোর পর যখন কিছুটা ইতিবাচক হওয়ার ইঙ্গিত দেয়া শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ, তখনই অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে প্লেইড অন হয়ে ফেরেন ৬৯ বলে ৩৯ রান করে। এরপর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি মিরাজও। মাত্র ১৪ রান করেই সিকান্দার রাজার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি।
এরপর দলীয় সংগ্রহকে ২৫০ পার করানোর প্রায় পুরো কৃতিত্বই আফিফ হোসেনের। ৬টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে ৮১ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
আগেই দুই ম্যাচ জিতে যাওয়ার ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ গেলো জিম্বাবুয়ের ঘরে। এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-১ ব্যবধানে জেতে জিম্বাবুয়ে। টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে জিম্বাবুইয়ানরা।
জেডআই/
Leave a reply