একজন আলভারেজকে বারবার পড়তে হবে

|

এই বছরের গোড়ার দিকে কথা। মাত্র ১৪ মিলিয়ন ইউরোতে ম্যানসিটিতে সাইন করলেন তিনি। ইংলিশ ক্লাবটির হিসেবে এই অঙ্কটা মাত্রই বলতে হবে। শুরু থেকেই অনেকটা পাদপ্রদীপের আড়ালেই ছিলেন তিনি। কারণ, হাল্যান্ডের চোখ ধাঁধানো পারফরমেন্স; কারণ তিনি তখনও সুপ্ত প্রতিভা, জ্বলে ওঠা হয়ে উঠেনি। কিন্তু পাদপ্রদীপের নিচে পড়ে থাকা তরুণ যে ম্যানসিটির জন্য লাভজনক সাইনিং ছিল সেটি তখনই বুঝেছিলেন ক্লাবটির স্পোর্টিং ডিরেক্টর জিকি বেজিরিস্টাইন। তিনি বলেছিলেন, ওয়াও! আলভারেজ! আমি খুব খুশি।

ও, হ্যাঁ, তরুণের নামটিই বলা হলো না। অবশ্য বিদগ্ধ পাঠকের কাছে সেটি এতক্ষণে জলবৎ তরলং। তবু আর্জেন্টিনার নাম্বার নাইন জুলিয়ান আলভারেজের নাম লিখতে ক্ষতি কী? বারবার লেখা যায়, লিখতে যে হবে সে দাবিও স্পষ্ট করলেন তিনি।

আর্জেন্টিনার কর্ডোবায় জন্ম নেয়া জুলিয়ান আলভারেজ ২০১৬ সালে বিখ্যাত আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভারপ্লেটে যোগ দেয়ার আগে ট্রায়াল দিয়েছেন আরেক খ্যাতনামা আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়রস ও স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদে। আলভারেজকে পছন্দ হলেও রিয়াল তাকে দলে ভেড়াতে পারেনি বিদেশি খেলোয়াড় সাইন করানোর বয়স সংক্রান্ত জটিলতার কারণে। পরে তিনি যোগ দেন রিভারপ্লেটেই।

২০১৮ সালে ক্লাব পর্যায়ে অভিষিক্ত জুলিয়ান পুরো মৌসুম জুড়ে দারুণ পারফর্ম করেন রিভারপ্লেটের হয়ে। ওই মৌসুমে ৯৬টি ম্যাচ খেলে তিনি গোল করেছেন ৩৬টি; অ্যাসিস্টের সংখ্যা ২৫। স্বভাবতই আর্জেন্টিনার জাতীয় যুব ফুটবল দলের কোচের নজরে পড়েন। এরপর জাতীয় দলে ডাক পেতে আর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি তাকে। ২০২১ সালের জুনে চিলির বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন আলভারেজ। প্রথম গোলের দেখা পান তারপরের ম্যাচেই, ইকুয়েডরের বিপক্ষে।

জুলিয়ান এখন ইংলিশ জায়ান্ট ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির সদস্য। ক্লাব কোচ পেপ গার্দিওলা বেশ খুশি তাকে নিয়ে। দলের হয়ে খেলা কিংবা প্র্যাকটিস সেশন, সব জায়গায়ই বেশ সক্রিয় ও সরব উপস্থিতি এ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের।

তার দৃঢ়চেতা মনোভাব ফুটে উঠেছে একাধিক গণমাধ্যমে যেখানে জুলিয়ান বলেছেন, আমি ট্রেনিং সেশনগুলোয় সবসময়ই আমার সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করি। আমি এটা দেখিয়েছি যে, আমি আমার জাতীয় দল বা ক্লাবের হয়ে যেকোনো পজিশনে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারি। এজন্য কোচ আমাকে চাইলেই আমাকে যেকোনো পজিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত পাবেন।

জুলিয়ান সম্পর্কে ম্যানসিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেন, ওর পা থেকে বল বের করাটা প্রতিপক্ষের জন্য একটা সমস্যা। ও গোল করতে পারে কিনা তাতে খুব বেশি কিছু যায় আসে না। কারণ, প্রতিটা প্র্যাকটিস সেশনই আমরা খুব কাছে থেকে দেখেছি। ও দারুণ ফিনিশিং দিতে পারে। আর, কঠিন মুহূর্তে ওর ফিনিশিংগুলো সবচেয়ে ভালো হয়।

গার্দিওলা যে কতটা সত্যভাষণ দিয়েছেন তার প্রমাণ কাতার বিশ্বকাপজুড়ে দিয়ে চলেছেন আলভারেজ। সবশেষটা দিলেন সেমিফাইনাল থেকে ক্রোয়াটদের বাড়ি পাঠিয়ে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply