একদিনে ৭৬ দফা মিসাইল এবং ড্রোন হামলায় প্রকম্পিত ইউক্রেন

|

ছবি: সংগৃহীত

একইদিনে ৭০’র দফার বেশি রুশ মিসাইলের হামলায় কেঁপে উঠলো ইউক্রেন। রাজধানী কিয়েভ, খারকিভসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং আবাসিক স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো হয় এসব ভয়াবহ হামলা। এতে শিশুসহ ১৬ জন হতাহতের খবর জানিয়েছে কিয়েভ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের শঙ্কা, হামলা চালাতে পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ রয়েছে রাশিয়ার কাছে। খবর রয়টার্সের।

এদিকে, ইউক্রেনে লড়াইরত কমান্ডারদের সাথে জরুরি বৈঠক করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন পুতিন।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) মুহুর্মুহু মিসাইল হামলায় আবারও প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ইউক্রেনের ভূখণ্ড। রুশ বাহিনীর একের পর এক লক্ষ্যভেদী টার্গেটের শিকার রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ অঞ্চল ও ক্রিভিরিহ শহরে। এদিন, ৭৬ দফা মিসাইল এবং ড্রোন রকেট ছুড়েছে পুতিনবাহিনী।

স্বজন হারানো এক ইউক্রেনীয় রয়টার্সকে বলেন, আজকের মিসাইল হামলায় আমার ছোট বোনটাকেও হারালাম। এমন কেনো হলো? আমার একমাত্র বোন, ওকে ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচবো? ছেলেকে হারানোর পর ও-ই আমার একমাত্র সম্বল ছিল।

শুক্রবারের হামলায় আহত এক ইউক্রেনীয় বলেন, এমন ভয়ানক অভিজ্ঞতা যেনো আর কারো না হয়। কিছুই মনে করতে পারছি না। শুধু এইটুকু বলতে পারবো যে, হঠাৎ একটা বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ পেলাম। এরপর, আমার আর কিছুই মনে নেই।

এদিন, শুধুমাত্র রাজধানী কিয়েভেই ৪০ দফা হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ফেব্রুয়ারিতে অভিযান শুরুর পর যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। হামলার মূল লক্ষ্যবস্তু ছিল ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং আবাসিক ভবন। ৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ক্ষেপণাস্ত্র। এর জেরে বহু এলাকায় বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ইয়েভেন ইয়েনিন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট সফলতা দেখিয়েছে এ হামলা ঠেকাতে। তা স্বত্ত্বেও ৫০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। যেগুলোর মূল লক্ষ্য ছিলো আমাদের বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো। মস্কোর লক্ষ্য আমাদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া।

এদিকে, রুশ হামলা জোরদারের পর মস্কোর মিসাইল মজুদ নিয়ে শঙ্কা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। বলছেন, ইউক্রেনে সংঘাত চালিয়ে যাবার জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে পুতিন প্রশাসনের।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, শুক্রবার কিয়েভে ৪০টির বেশি মিসাইল ও রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া খারকিভেও দিনভর দফায় দফায় চলেছে হামলা। শুক্রবারের হামলাগুলো সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করাই রুশ বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য। মস্কোর পর্যাপ্ত পরিমাণ মিসাইল রয়েছে। হামলা প্রতিহত করার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও আত্মবিশ্বাসী।

এদিকে, হামলা জোরদার নিয়ে নানা জল্পনার মাঝেই শীর্ষ সেনাকর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের রণকৌশল নিয়ে নতুন পরিকল্পনার উদ্দেশ্যেই এ বৈঠক।

সম্প্রতি হামলার পরিধি কমিয়ে আনায় ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের পথে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। তবে এখন এটিকে পুতিনের রণকৌশলের অংশ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply