কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে আর মাত্র একদিন দূরত্বে দাঁড়িয়ে লিওনেল মেসি। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার যদি লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে হারিয়ে দেন ফ্রান্সকে, তাহলে হয়তো ‘অন্যতম’ শব্দটির ব্যবহার আর নাও দেখা যেতে পারে। আর এরকম এক বিশেষ সময়েই ভাইরাল হয়েছে লিওনেল মেসির সর্বপ্রথম ইন্টারভিউয়ের পেপারকাটিং।
মেসির জন্মস্থান স্থান রোজারিও ভিত্তিক গণমাধ্যম দায়রিও লা ক্যাপিটাল’কে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ১৩ বছরের মেসি। আর সেই সাক্ষাৎকার এখন ছড়িয়ে পড়েছে অন্তর্জালে। যে মেসিকে ছাড়া ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়কে ভাবাই যায় না, যে মেসি ফুটবল বিশ্বে রাজত্ব করে চলেছেন বিগত দুই দশক জুড়ে; সেই মেসির দিকে আরও একবার তাকিয়ে পুরো ফুটবল বিশ্ব। তার অসংখ্য সাক্ষাৎকারের মাঝে সর্বপ্রথমটি অবধারিতভাবেই চলে এসেছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। কেমন ছিলেন ফুটবলের মহাতারকা মেসি, কী কী প্রিয় ছিল তার; জানা যাচ্ছে সেসবের উত্তর।
নিউয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে দশম ডিভিশনের খেলোয়াড় ছিলেন তখন মেসি। সাক্ষাতকারের প্রারম্ভেই ছিল, আক্রমণাত্মক এই খেলোয়াড়ের সামনে পড়ে আছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। খর্বকায় উচ্চতার কারণে এক, দুই, তিন খেলোয়াড়কেও কাটিয়ে অনায়াসে গোল করা কোনো সমস্যাই নয় মেসির জন্য। ফুটবল নিয়ে সময় কাটাতে পছন্দ করেন এই খেলোয়াড়। তবে আরও কী কী পছন্দ তার, সে সবই জানা যাবে এবার।
মেসির হিরো কে: দুইজন। বাবা হোর্হে এবং দাদা ক্লদিও।
প্রিয় কোচ: যাদের অধীনে খেলেছি তারা সবাই। গ্যাব্রিয়েল, মোরালেস, ডমিঙ্গুয়েজ, ভেচ্চিও, কোরিয়া। তাদের সবার কাছ থেকেই অনেক কিছু শিখেছি।
ফিটনেস কোচ: পাবলো সানচেজ।
খেলোয়াড়: দুইজন। আমার ভাই এবং কাজিন।
প্রিয় দল: নিউয়েলস।
অবসরে প্রিয় কাজ: গান শোনা।
যাদের গান ভালো লাগে: কুয়ার্তেতো এবং কুম্বিয়া।
প্রিয় টিভি প্রোগ্রাম: প্রিমিসিয়াস।
প্রিয় ম্যাগাজিন: প্যাশন রোজিনেগ্রা (নিউয়েলসের ফ্যান ম্যাগাজিন)।
প্রিয় বই: বাইবেল।
প্রিয় মুভি: বেবি’স ডে আউট।
অন্য প্রিয় খেলা: হ্যান্ডবল।
প্রিয় মডেল: নিকোল নিউম্যান।
প্রিয় খাবার: চিকেন এবং সস।
প্রিয় বিষয়: স্প্যানিশ।
প্রিয় চাকরি: শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক।
প্রাথমিক উদ্দেশ্য: মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা সম্পন্ন করা।
লক্ষ্য: প্রথম ডিভিশনে খেলা।
আনন্দের মুহূর্ত: যখন আমরা চ্যাম্পিয়ন হলাম।
বিষণ্ণতার সময়: দাদীর মৃত্যু।
আশা: নিউয়েলসের হয়ে প্রথম ডিভিশনে খেলা।
প্রিয় স্মৃতি: প্রথমবারের মতো যখন দাদী আমাকে ফুটবল খেলতে নিয়ে গেলেন।
স্বপ্ন: আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা।
উল্লেখযোগ্য ঘটনা: যেবার আমরা পেরুতে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলাম।
নম্রতা: এমন একটি মানবিক গুণ যা কখনোই হারানো উচিত নয়।
আর্জেন্টিনা যুবদল: তাদের হয়ে আমি খেলতে চাই।
এই বছরের আশা: আবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়া।
পরিবার: আমার বাবা হোর্হে, মা সেলিয়া, ভাই রদ্রিগো, দুই বোন নাতালিয়া এবং মারিসল।
বন্ধু: বেশ কয়েকজন ভালো বন্ধুকে পেয়েছি। সবার নাম বলতে গেলে হয়তো কারো না কারো নাম ভুলে যাবো।
জীবনে নিউয়েলসের গুরুত্ব: সব। নিউয়েলস আমার সবকিছুই।
মেসির এই সাক্ষাৎকার পড়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, শৈশবের সকল লক্ষ্যই পূরণ হয়েছে মেসির। আর্জেন্টিনার ফার্স্ট ডিভিশনে খেলার ইচ্ছে ছিল তার। সেটি পূরণ হয়েছে। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নও হয়েছে সত্যি। এমনটা বলা হয়তো অত্যুক্তি হবে না যে, ছোটবেলার প্রায় সকল স্বপ্ন পূরণ করে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হওয়ারই যেন দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন মেসি। তবে, নিউয়েলসের হয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে খেলার ইচ্ছে এখনও পূরণ হয়নি মেসির। তবে সেই সময় এখনও আছে। আর সিংহাসনও প্রস্তুত। লিওনেল মেসির ভবিষ্যৎ কেমন হবে, সেটাও হয়তো প্রভাবিত হবে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে স্বপ্নের ফাইনালের ফলাফলের পর।
আরও পড়ুন: মেসি ২০ বছরের যুবকের মতো খেলছে, সে কাপের জন্য ক্ষুধার্ত: বাতিস্তুতা
/এম ই
Leave a reply