জানি না কী বলতে হবে, কী করতে হবে; হেভিমেটাল ফুটবল হারিয়ে হতাশ ক্লপ

|

ছবি: সংগৃহীত

হেভি মেটাল ফুটবলে অ্যানফিল্ডকে জাগিয়ে তুলেছিলেন যে ইয়ুগের্ন ক্লপ, টানা ব্যর্থতায় আজ হা-পিত্যেশ করছেন তিনি। ইনজুরি আর পরিকল্পনাহীন দলবদলের কারণে দুরবস্থার মাঝে পড়েছে অলরেডরা। গোলবার থেকে আক্রমণভাগ- সবখানেই এখন সমস্যা। বাধ্য হয়েই লিভারপুল সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। বলেছেন, জানি না কী বলতে হবে, কী করতে হবে। খবর রয়টার্সের।

লিগ টেবিলের ৮ নাম্বারে এখন লিভারপুল। মৌসুম শেষে শীর্ষ চারে থাকার নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। ইয়ুর্গেন ক্লপের হেভি মেটাল ফুটবল যেন হাওয়া! একের পর এক পরাজয়ে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর ক্ষ্যাপাটে এই কোচ অলরেড ফ্যানদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন! বলেছেন, এরচেয়ে খারাপ পারফরমেন্স মনে করতে পারছি না। আমরা ইনজুরিতে জর্জরিত। কিন্তু টানা যা ঘটছে তা লিভারপুলের সাথে যায় না। আজ যে একাদশ খেলেছে সেটি কিন্তু খারাপ না। কিন্তু তারা ভালো কিছু দিতে পারেনি। এখন সেই সময় নয় যে, আমি বলবো কালই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি অপারগ! ঠিক জানি না কী বলতে হবে, কী করতে হবে। হয়তো কাল কিছু করার, ভাবার সুযোগ মিলবে।

পরিসংখ্যান বলছে, প্রিমিয়ার লিগের সেরা মিডফিল্ডাররা সব ২২ থেকে ২৮ বছর বয়সী; একমাত্র নাবি কেইটা ছাড়া লিভারপুলের বাকি সবাই এই বয়স ছাড়িয়ে গেছেন। লিভারপুলের ট্রেডমার্ক গেগেনপ্রেসিং ফুটবল খেলার জন্য হয়তো একটু বেশিই বয়স হয়ে গিয়েছে জর্ডান হেন্ডারসন, থিয়াগো আলকান্তারা, ফ্যাবিনহো, হার্ভে ইলিয়ট, অক্সলেড চেম্বারলেইন, জেমস মিলনারদের। সবাই যেন নিজেদের সেরা সময়কে পেছনে ফেলে এসেছেন! বিশেষ করে থিয়াগো ও চেম্বারলেইন ইনজুরি থেকে ফিরেও ছন্দহীন। মাঝমাঠ সামলাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও কম করেননি কোচ। কিন্তু তা কাজে দেয়নি। হঠাৎ করেই লিভারপুলের মিডফিল্ড যেন যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত এক শিবির!

আক্রমণভাগের দুর্বলতাও স্পষ্ট। সাদিও মানে দল ছেড়েছেন। চোট সমস্যায় লুইস দিয়াজ ও দিয়াগো জোতা দীর্ঘ সময় ধরে অনুপস্থিত। সাম্প্রতিক সময়ে রবার্তো ফিরমিনো ও ডারউইন নুনেজও পড়েছেন ইনজুরিতে। একসাথে এই চার ফরোয়ার্ডের অনুপস্থিতি লিভারপুলের দুরাবস্থা বাড়িয়েছে। তরুণ কোডি গ্যাকপো কেবলই এসেছেন। নতুন ক্লাবে এসেই পরিস্থিতির দাবি মেটানোর কঠিন কাজটা তিনি করতে পারছেন না। গোল পাচ্ছেন বটে, তবে ধারাবাহিকতা নেই মোহামেদ সালাহর পারফরমেন্সে।

রক্ষণভাগে ভার্জিল ভ্যান ডাইকের অনুপস্থিতি অপূরণীয় ক্ষতি। তার অভাবে ছন্নছাড়া পুরো ডিফেন্স। ইব্রাহিম কোনাতে পুরোপুরি ফিট নন। জোয়েল মাতিপ, আলেকজান্ডার আরনল্ড, অ্যান্ডি রবার্টসনরা চূড়ান্ত রকমের অফ-ফর্মে। গোলবারে অ্যালিসন ভুগছেন আত্মবিশ্বাসের অভাবে, বাজে গোল খাওয়ার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন বেশ ক’টি!

সব মিলে চলতি মৌসুমে দলে ভেড়ানো উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ এখনও ভরসার প্রতীক হতে পারেননি। হেন্ডারসন-ফ্যাবিনহো মিডফিল্ডে ভরসা দিতে পারছেন না! দলবদলে পরিকল্পনার ঘাটতি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে এখন। একজন সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডারের অভাব ভোগাচ্ছে ক্লাবটিকে। ক্যাসেমিরো-ব্রুনো ফার্নান্দেস-কেভিন ডি-ব্রুইনা-পল পগবা-টনি ক্রুস-জুড বেলিংহাম-ম্যাক অ্যালিস্টার মানের কোনো মিডফিল্ডারই নেই দলটিতে। ক্লপের অসহায়ত্বের তাই কারণও অগণিত!

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply