কার্লসেনের রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ডিং লিরেন

|

জীবনের মানে হয়তো খুঁজে পেয়েছেন ডিং লিরেন। ছবি: সংগৃহীত

‘এরকম কোনো বিশেষ ঝলমলে মুহূর্তেই বোধহয় খুঁজে পাওয়া যায় জীবনের মানে।’- ২০১৯ সালে বলা কথাটি হয়তো এখন নতুনভাবে অনুভব করতে পারছেন ডিং লিরেন। বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার ইয়ান নেপোমনিয়াচতচিকে হারিয়ে যে দাবার নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন চীনের এই ডিং লিরেন! ডিংয়ের এই বিজয়ে অবসান ঘটলো পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের রাজত্বের। চেস ডটকমের খবর।

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল বরাবরই প্রচণ্ড স্নায়ুক্ষয়ী হয়ে থাকে। কিন্তু ডিং লিরেন ও ইয়ান নেপোমনিয়াচতচির মধ্যকার কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত ফাইনালটি যে ম্যারাথনের রূপ নেবে, তা হয়তো অনুমান করতে পেরেছিলেন খুব কম সংখ্যক মানুষ। টুর্নামেন্টের ক্ল্যাসিক্যাল সেকশনের ১৪টি গেম শেষ হয় ৭-৭ সমতায়।

ছবি: সংগৃহীত

এরপর চ্যাম্পিয়নশিপ গেম গড়ায় টাইব্রেকারে। র‍্যাপিড দাবার প্রথম তিন গেমও হয়েছে ড্র। চতুর্থ ও ফাইনাল গেমে নেপোমনিয়াচতচিকে হারিয়ে অবশেষে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন ডিং লিরেন। ২.৫-১.৫ পয়েন্টের ব্যবধানে জিতে ওপেন ক্যাটাগরিতে চীনের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে ম্যাগনাস কার্লসেনের উত্তরসূরি হন ডিং লিরেন।

ছবি: সংগৃহীত

৩০ বছর বয়সী ডিং লিরেন চীনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেটিং পাওয়া দাবাড়ু। তার জয়ে অবসান ঘটে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের ১০ বছরের রাজত্বের। গত জুলাইয়ে কার্লসেন ঘোষণা দেন, চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখার লড়াইয়ে আর অবতীর্ণ হবেন না তিনি। আর, এর মাধ্যমেই ডিং লিরেনের ভাগ্য খুলে যায়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে কে চ্যালেঞ্জ জানাবে, সেটা নির্ধারিত হয় যে আসরে, সেই ক্যান্ডিডেট টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পান চীনের এই গ্র্যান্ডমাস্টার। সেখানে রানারআপ হয়ে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা অর্জন করেন ডিং লিরেন।

ছবি: সংগৃহীত

কাজাখস্থানের আস্তানায় অবস্থিত সেন্ট রেজিস হোটেলে সৃষ্টি হয় এক আবেগাপ্লুত দৃশ্যের, যখন র‍্যাপিড রাউন্ডের ফাইনাল ও চতুর্থ গেমের টাইব্রেকারে হাল ছেড়ে দেন নেপোমনিয়াচতচি। মাথার দুইপাশে হাত দিয়ে বসে থাকা ডিং লিরেনের চোখে দেখা যায় আনন্দাশ্রু। এই দৃশ্যেই ফিরে আসে বছর চারেক আগে বলা ডিং লিরেনের সেই কথা, জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া নিয়ে যে বিশেষ মুহূর্তের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এবার বললেন, যে মুহূর্তে ইয়ান খেলা ছেড়ে দিলো, আমি আর নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। আমার মনে হয়, এই ম্যাচে আমার হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশেরই প্রতিফলন ঘটেছে।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply