আজও আফগানিস্তানের রাস্তা-ঘাটে মৃত্যু ফাঁদ হয়ে আছে হাজারো ক্লাস্টার বোমা

|

বিশ্বব্যাপী ক্লাস্টার বোমা নিয়ে বিতর্কের মাঝে আলোচনায় মার্কিন আগ্রাসনের সময় আফগানিস্তানে এই বোমার ব্যবহার নিয়ে। যার আঘাতে এখনও ভুক্তভোগী বহু আফগান। দেশটি ছেড়ে আসার সময় ফেলে আসা অবিস্ফোরিত বোমাগুলো মৃত্যু ফাঁদ হয়ে আছে বেসামরিকদের জন্য। মাঠে ঘাটে এখনও পড়ে আছে হাজার হাজার গুচ্ছ বোমা।

আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশকের মার্কিন আগ্রাসনের পর এখন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে আছে ফেলে আসা ক্লাস্টার বা গুচ্ছ বোমা। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ফেলে আসা বোমাগুলো বিস্ফোরিত হয়ে এখনও হতাহত হচ্ছে অনেক বেসামরিক আফগান।

সোলেমান নামে এক আফগান ভুক্তভোগী এ ব্যাপারে বলেন, যখন আমি বোমা হামলার শিকার হই তখন আমার বয়স ৬। আমার মনে আছে একটি বোমা হঠাৎ আমার পেছনে আঘাত করে। সেই দুর্ঘটনা আমার জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়েছে।

২০০১ সালে তৎকালীন তালেবান সরকারকে উৎখাতের জন্য আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় তিন বছর ধরে গোটা দেশে প্রায় দেড় হাজার ক্লাস্টার বোমা ফেলা হয়। দেশটির শহীদ ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ও গুচ্ছ বোমার আঘাতে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ পঙ্গু আফগান রয়েছে।

আফগানিস্তানের শহীদ ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ কারি শাহ মোহাম্মদ বলেন, আমাদের কাছে নিবন্ধিত পঙ্গু ব্যক্তি ছাড়াও বহু আহত আফগান আছে। দখলদারিত্বের কয়েক বছরে মার্কিন সেনাদের তাণ্ডবে এখনও বিপর্যস্ত আমরা। সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্বকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

দেশটির সামরিক বিশেষজ্ঞ আব্দুল ওয়াহিদ তাকাতের মতে, আফগানদের ওপর এই বোমা যে দুর্বিষহ প্রভাব ফেলেছে তার পরেও যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের কাছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ক্লাস্টার বোমা সরবরাহ করছে। এটা অমানবিক। যুক্তরাষ্ট্র আর তার মিত্ররাই এই ভয়াবহতার জন্য দায়ী। ন্যাটোর মাধ্যমে তারা তাদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করছে।

বিশ্বের শতাধিক দেশে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা। কিন্তু ওয়াশিংটন এখনও এই বোমা নিষিদ্ধের আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করেনি।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply