ঘরোয়া ক্রিকেটে আবারও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ

|

হাসান আল মারুফ:

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আবারও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। চলমান তৃতীয় বিভাগের ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট অ্যাকাডেমির বিপক্ষে ম্যাচ ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো বলে দাবি করছেন আলফা ক্লাবের এক ক্রিকেটার। বোলারকে দিয়ে ওপেনিং করানো, ২১ রান অতিরিক্ত দেয়া, একাধিক পারফরমারকে বসিয়ে রাখার সত্যতাও পেয়েছে যমুনা টেলিভিশন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লাবটির কোচ।

অভিযোগকারী ক্রিকেটার বলেন, সবাই গিয়ে তাড়াহুড়ো করে উইকেট দিয়ে দিয়েছে। একেক জনের একেক নিদর্শনা ছিলো। ম্যাচ জিততে হবে এমন কোনো নির্দেশনা ছিলো না। শেষের দিকে রান কম হওয়ায় পার্ট টাইম বোলার ব্যবহার করছিলো। যাতে কিছু রান দিয়ে স্কোর বড় করা হয়। তারপর ব্যাটিংয়ের সময় আগের ম্যাচে ৯ নাম্বারে ব্যাটিং করছে তাকে নামানো হয়। এমনকি ওই ম্যাচে যে ওয়ান ডাউনে ব্যাটিং করছে। সে আগের ম্যাচে ১০ নাম্বারে ব্যাটিং করেছিলো।

গত ১৪ নভেম্বর ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেট অ্যাকাডেমির বিপক্ষে আলফা স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ চলছিলো। দুই দলের সামনেই সমান সুযোগ- জিতলেই সুপার লিগ খেলার। ট্যালেন্ট হান্টের দেয়া ১৮২ রানের লক্ষ্যে তখন ব্যাটিং এ আলফা স্পোর্টিং ক্লাব। ম্যাচের মাঝেই যমুনা টিভির হাতে খবর আসে ম্যাচ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে আলফা স্পোর্টিংকে। এজন্য দলটা ৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায়।

কীভাবে ম্যাচ পাতানো হয় সেটা জানান অভিযোগকারী ওই ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ৩০ রানে ০ উইকেট দেখে ম্যাচের মাঝে কল আসে, কেন উইকেট যাচ্ছে না। তখন কোচ বলেন, নিচের দিক থেকে বোলার নামানো হয়েছে, উইকেট না গেলে কি করবো? এমনকি ওই ম্যাচে তিনটা খেলোয়াড়কে পরিবর্তন করা হয়।

ওই ম্যাচের স্কোর কার্ড বিশ্লেষণ করে যমুনা টিভি। দেখা যায়, এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আলফা ক্লাব- ওপেনিং করতে নামায় দলের মূল বোলারকে। ওয়ান ডাউনেও নামানো হয় সেই ব্যাটারকে যিনি দলের ১০ নম্বর ব্যাটার। এমনকি দলের দুই মুল দুই পারফরমারকে ডাগ আউটে বসিয়ে রাখা হয়। দলের টপ উইকেট টেকার মুশফিক-মুন্নাকে যেমন খেলানো হয়নি তেমনি এই ম্যাচে অতিরিক্ত ২১ রান দেয় আলফার বোলাররা।

স্কোরকার্ডে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেলেও যথারীতি তা অস্বীকার করছেন আলফা স্পোর্টিং ক্লাবের কোচ তারেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখানে জিতলে আমি তো সুপার লীগে যাবো। যেখানে সুযোগ আছে সুপার লীগে যাওয়ার, তাহলে আমি কেন ম্যাচ ছাড়বো? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।

তবে বিপরীত অবস্থানে অভিযোগকারী সেই ক্রিকেটার বলেন, ৩১ অক্টোবর তাদের নাখালপাড়া দলের সাথে খেলা ছিলো। ওই ম্যাচে ওরা মাত্র ৮৭ রানের টার্গেট দিয়েছিলো। ৬৪ রানে তিন উইকেট থেকে বাকি ৭ উইকেট চলে যায়।

ম্যাচ চলাকালে মাঠে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি কমিশন- আকসুর একজন প্রতিনিধি। দলের একজন ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেয়া হয়। যমুনা টিভির পাশাপাশি বিসিবির এন্টি করাপশন ইউনিটও নিশ্চিত হয়েছে যে, ম্যাচটি পাতানো ছিলো।

সম্প্রতি বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, থার্ড ডিভিশন ক্রিকেট লীগে এন্টি করাপশন থেকে একটা করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বোর্ড এসব বিষয় নিয়েও সতর্ক আছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

/এসআইএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply