২০১০ প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলেছিলেন লেগ-স্পিনার হিসেবে। ন’বছর বাদে এসে সেদিনের তরুণ লেগ-স্পিনার স্টিভ স্মিথ আজ অ্যাশেজের তৃতীয় সর্বাধিক শতরানকারী (১১)। সামনে কেবল জ্যাক হবস (১২) ও স্যার ডন ব্র্যাডম্যান (১৯)। উল্লেখযোগ্যভাবে, আইসিসি ব্যাটসম্যান র্যাংকিংয়ে স্মিথের রেটিং পয়েন্ট ৯৪৭। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের সর্বকালের রেটিংয়ে যা দ্বিতীয় সর্বাধিক। নিরিখে সামনে কেবল কিংবদন্তি ব্র্যাডম্যান (৯৬১)।
তবে মাঝের জার্নিটা খুব একটা সহজ ছিল না। যার সাম্প্রতিকতম নিদর্শন স্যান্ডপেপার গেট কান্ডে একবছরের নির্বাসন কিংবা চলতি অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে জোফ্রা আর্চার ঘাতক বাউন্সারে ধরাশায়ী হওয়ার ঘটনা। কিন্তু টলানো যায়নি প্রাক্তন অজি অধিনায়ককে। বার্মিংহ্যামে প্রথম টেস্টে জোড়া ইনিংসে শতরান। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯২ রান। তৃতীয় টেস্ট বিশ্রামের পর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে যেন তারপর থেকেই শুরু করলেন স্মিথ।
নিশ্চিতভাবে চলতি অ্যাশেজের পর যারা তাঁর ব্যাটিংয়ের অনুরাগী নন, তারাও নাম লেখাতে বাধ্য হবেন স্মিথের অনুরাগীর তালিকায়। স্মিথের ব্যাটিং স্টাইল অনুরাগীদের কাছে দৃষ্টিনন্দন না হলেও ব্যাটিং ঘরানায় দিনের পর দিন অনুরাগীদের মোহিত করে চলেছন ৬৭ টেস্টে ২৬টি শতরানের মালিক।
বৃহস্পতিবারের দ্বিশতরানের পর তাই প্রাক্তন ইংরেজ অধিনায়ক লিখতে বাধ্য হয়েছেন, ‘নয়নাভিরাম। এমনিতে আমি অস্ট্রেলীয়দের সম্বন্ধে বিশেষ আলোচনা পছন্দ করি না। কিন্তু স্টিভ স্মিথের দক্ষতা, শৃঙ্খলাপরায়ন, মনোসংযোগের তুমি তারিফ করতে বাধ্য। স্টিভ স্মিথ তুমি একজন খামখেয়ালী। হাত ও চোখের হাস্যকর সমন্বয়।’
১২টি টেস্ট কম খেলে টেস্ট ক্রিকেটে শতরান ও সংগৃহীত মোট রানে বৃহস্পতিবার পিছনে ফেলেছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। পাশাপাশি বর্ডারের পর দ্বিতীয় অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দু’টি অ্যাশেজ সিরিজে স্মিথের ধারালো উইলো থেকে এল পাঁচশোরও বেশি রান।
যা দেখেশুনে অতি বিরাট ভক্ত অনুরাগীরাও বলছেন, ‘কোহলি নয়, আধুনিক ক্রিকেটে সেরা স্মিথই।’ কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় বাকিদের চেয়ে আলাদা স্টিভ স্মিথ। ম্যাঞ্চেস্টারে স্মিথের ২১১ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস দেখে মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকর সেই রহস্য উদঘাটন করলেন।
টুইটারে মাস্টার ব্লাস্টার লিখলেন, ‘জটিল টেকনিক অথচ গোছানো মানসিকতা স্টিভ স্মিথকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছে। অসাধারণ কামব্যাক।’ স্মিথের ২১১, টিম পেইনের ৫৮ ও শেষবেলায় মিচেল স্টার্কের অপরাজিত ৫৪ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড়ে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ৪৯৭ রানে জবাবে দ্বিতীয়দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ১ উইকেটে ২৩।
Leave a reply