ম্যাচের আগেরদিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম প্রায় জনশূন্য। বিরল ঘটনাই বটে। গেটের সামনে কয়েকজন আনসার সদস্য, আর বিসিবি কার্যালয়ে গুটিকয়েক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সঙ্গে হাতেগোনা কয়েকজন সাংবাদিক।
অনুশীলন করেনি দু’দলের কেউই। সাংবাদিকরা তাই বিদায়ী ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফী পেয়ে আড্ডায় মেতে থাকলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি ২০ ম্যাচ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনাই নেই।
কেউ কেউ বলে উঠলেন, আগামীকালের খেলা হবে তো? সবার আলোচনায় তখনও এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের দুটি ম্যাচ বন্ধের ঘোষণা কখন আসবে! করোনাভাইরাসের আতঙ্ক গ্রাস করেছে মিরপুরকেও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি শেষ হলেই যেন বাঁচে বিসিবি। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, শেষ ম্যাচেও প্রভাব বিস্তার করে বড় জয় তুলে নিতে চায় বাংলাদেশ। দাপটের সঙ্গেই সিরিজ শেষ করতে চায় স্বাগতিকরা। সফরে এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই হেরেছে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশ এই টি ২০ সিরিজ দিয়েই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে তাই বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এখান থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজটা সারতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। আজ তাই একাদশে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আসবে। তামিম ইকবাল আজ একাদশে না-ও থাকতে পারেন।
একাদশে জায়গা হতে পারে নাঈম শেখের। টপঅর্ডারে তামিম, লিটন দাস, নাঈম ও সৌম্য সরকারের মধ্যে কে কোথায় খেলবেন সেটা নিয়েই যত আলোচনা। এছাড়া অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেয়ার জন্যও চেষ্টা চলছে।
প্রথম টি ২০ ম্যাচে দারুণ শুরু করেছিলেন লিটন ও তামিম। ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন তারা। তামিম ৪১ রানে থামলেও ফিফটি তুলে নেন লিটন। তিনে নেমে শেষদিকে ঝড় তোলেন ম্যাচসেরা সৌম্য সরকার। শেষ ওভারে ২০ রান নিয়ে দলকে দুইশ’ রানের পাহাড়ে তুলে দেন। পরে বোলাররা নিজেদের কাজটা করেছেন।
জিম্বাবুয়ের বোলিং লাইনআপ খুবই দুর্বল। তাই এই পারফরম্যান্স দিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট চূড়ান্ত মূল্যায়ন করতে পারছেন না। তবু দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলেই ধারণা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। শেষ ম্যাচেও দাপুটে ক্রিকেট খেলার বার্তা সতীর্থদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন টি ২০ অধিনায়ক। কাল দলের ২৫ বছর বয়সী অফ-স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে ঢুকেই দেখি সিনিয়ররা আলোচনা করছেন, এখন থেকে আমরা যেন দাপুটে ক্রিকেট খেলি।
সব সময় ইতিবাচক ও প্রাণবন্ত মানসিকতা নিয়েই যেন সবাই খেলে।’ এদিকে গত বছর ত্রিদেশীয় টি ২০ সিরিজেও বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এবার তাদের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতাই দেখা যাচ্ছে না। বাজে বোলিংই বেশি ভুগিয়েছে সফরকারীদের।
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শন উইলিয়ামস বলেন, ‘বোলিংটা খুবই খারাপ হচ্ছে। দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় আছে। এখন তাদের শেখার সময়। শেষ ম্যাচে জয় নিয়ে দেশে ফিরতে পারলেও কিছু প্রাপ্তি হবে।’ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষে একটি করে ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে ২৯ মার্চ পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে যদি ঢাকায় এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ না হয় তাহলে পাকিস্তান সফরও বাতিল করবে বিসিবি।
Leave a reply