দুই দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক অপরিহার্য নাম মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। শেষ বয়সে হুইল চেয়ারে কাটানোর শংকা থাকার পরও ঘাড়ের রগটা বাঁকা করে চালিয়ে গেছেন যুদ্ধ। অবসর, রাজনীতি,ক্রিকেটারদের আন্দোলনে না থাকা এমন খুঁটিনাটি অনেক বিষয় কথা বললেছেন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের সাথে এক অনলাইন আড্ডায়।
অবসর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিলো অনেক। কেনো বিশ্বকাপের সময় অবসর নিলেন না? খোলাসা করলেন অনেক প্রশ্নেরই।
মাশরাফী বলেন, আমার অবসরের ঘটনা এর আগেও একটা ঘটেছে, সেটা টি-টোয়েন্টিতে। আমি আপনাদের (সংবাদ মাধ্যমের) সামনে এসে আদৌ কাউকে কারো কথা বলিনি যে কি কারণ। তখন কিন্তু সবাই আমার পক্ষেই ছিল। তারপরও আমি কিছু বলিনি। সবাই যখন আমার পক্ষে নাই, তখনও এত কিছু বলার নাই। শুধু একটা কথাই বলব বিশ্বকাপের (২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ) শেষ ম্যাচে আমি অবসর নিতে চেয়েছিলাম।
মাশরাফী বলেন, এটা যদি কেউ অস্বীকার করতে পারে, এমনকি যদি ক্রিকেট বোর্ড থেকেও অস্বীকার করে, তাহলে তাকে আমার সামনা সামনি কথা বলতে হবে। শেষ ম্যাচে (পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ) যখন আমার কাছে মনে হয়েছিল, তখন আমি করতে (রিটায়ার্ড) চেয়েছিলাম।
মাশরাফী আরও বলেন, ‘এরপর যেটা হয়েছিল, যে এভাবে না হোক, সুন্দরভাবে হলেই বেটার। এরকম একটা কথা আসছে। দেশের ফেরার পর যখন জিম্বাবুয়েকে কতটাকা খরচ করে, একটা ম্যাচ আয়োজন দুই কোটি। তখন আমার কাছে মনে হয়েছিল, মাশরাফী হয়তো বা ডিজার্ব করে মাঠ থেকে বিদায় নেওয়াটা। কিন্তু একটা ম্যাচের জন্য দুই কোটি টাকা এটা কখনো ডিজার্ব করে না। যেখানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করুণ চিত্র, সেখানে আমার একার জন্য দুই কোটি টাকা দিয়ে আয়োজন করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। স্রেফ এই জায়গা থেকে আমি অবসর নেইনি।
যা হোক এরপর এ বছর মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব থেকে অবসরে যান মাশরাফী।
মাঠের মধ্যমনি হয়ে থাকা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, মাঠের বাইরেও যে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্যারিয়ারের দুই দশকে বেশ চড়াই-উতরাইয়ের ঘটনাবহুল জীবন ম্যাশের।
বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই সব মজার স্মৃতিবহুল ঘটনা তুলে ধরেন মাশরাফী। যেখানে ছিলো দেরি করে আসা, হাতের ব্রেসলেট-সানগ্লাসের শখ, সুইমিংপুলে সতীর্থদের কাপড় খুলে দেয়া, দলের সবার ডাক নাম দেয়া। তবে নিজের পাগলা ডাকটাকে অনেক মিস করেন বলেও জানান তামিম।
ইনজুরির কারণে এ দীর্ঘ ক্যারিয়ারে চিকিৎসকের ছুঁরির নিচে তাকে যেতে হয়েছে অসংখ্যবার। সেখানে সখ্যতা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ডাক্তার ডেভিড ইয়ংয়ের সাথে। তবে এই চিকিৎসক জানিয়েছেন শেষ বয়সে হুইল চেয়ারে কাটাতে হতে পারে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে।
প্রশ্ন ছিলো ক্রিকেটারদের অন্দোলনে কেনো ছিলেন না তিনি? জানালেন সেখানেও তিনি ছিলেন, করা হয়েছে মিথ্যাচার। তবে সব ক্ষোভ ভুলে এখনো সবার সাথে বেশ জমিয়েই আড্ডা দেন ম্যাশ। সবাইকে ভালোবাসেন পরিবারের সদস্যদের মতই।
Leave a reply