দেশের উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা চলছে। এর মধ্যে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে কয়েক দিন ধরে পানি নামছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে পুনরায় বন্যা শুরু হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দিয়েছেন। উত্তরাঞ্চলের পানি নেমে আসায় শনিবার মধ্যাঞ্চলের সাত জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বন্যাদুর্গত এলাকার নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির পাশাপাশি গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় আউশ, আমন ও শাকসবজির মাঠ তলিয়ে গেছে। বন্যাকবলিত পরিবারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য গরু-ছাগল নিয়ে স্কুল, উঁচু রাস্তায় ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।
শরীয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা সড়কে পানি ওঠায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কোরবানির জন্য গৃহপালিত গবাদিপশু নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা মারাত্মক বিপদে পড়েছে। বন্যার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে শেরপুর-জামালপুর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মানুষজন নৌকায় করে যাতায়াত করছে।
পদ্মায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরের শিবচরে নদীভাঙনে মাদ্রাসা ভবনসহ তিন শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। টাঙ্গাইলে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুড়িগ্রামে পানিতে ডুবে গ্রামপুলিশ সদস্যসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ও একজন আহত হয়েছে। দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকায় বানভাসিদের নানা ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। প্রতিটি বন্যাদুর্গত পরিবারে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। ক্ষুধার জ্বালায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) শনিবার এক বুলেটিনে জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি হ্রাস পাচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানিও হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া হ্রাস পাচ্ছে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি।
Leave a reply