তারকায় ঠাসা ও বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী আক্রমণভাগ নিয়েও সাফল্যের দেখা পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। শিরোপা জয়ের প্রায় তিন দশকের আক্ষেপ সঙ্গী করে আরও একবার কোপা আমেরিকা মিশনে নেমেছে লিওনেল মেসির দল। এবার কি ভাঙ্গবে ব্যর্থতার বৃত্ত? আকাশি-নীল জার্সিতে মেসি পারবেন কি শিরোপা উচিয়ে ধরতে? নাকি আরও অপেক্ষা করছে একটি হতাশার গল্প?
লিওনেল মেসি, সার্জিও অ্যাগুয়েরো, লাওতারো মার্টিনেজ ও আনহেল ডি মারিয়া- ইউরোপের শীর্ষ চার লিগ মাতানো এই ফরোয়ার্ডরা দিনের পর দিন ব্যর্থ নিজ দেশ আর্জেন্টিনার হয়ে। আকাশি-নীল জার্সিতে কখনই শিরোপা জেতার উচ্ছ্বাসে মাতা হয়নি তাদের।
প্রয়াত দিয়েগো ম্যারাডোনার হাত ধরে আর্জেন্টিনা সবশেষ শিরোপা জিতেছিলো প্রায় তিন দশক আগে। আর সেটিও ১৯৯৩ সালের কোপা আমেরিকার ট্রফি জয়ের মাধ্যমে।
এরপর পেরিয়েছে ২৭টি বসন্ত। কিন্তু কখনই উৎসবের রং লাগেনি আকাশি-নীল পতাকায়। বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিও আটকে থাকলেন ক্লাব জার্সিতেই।
অথচ এই সময়ে পাঁচটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেও একবারও শিরোপা উঁচিয়ে ধরা হয়নি আর্জেন্টিনার। যার চারটিতেই মাঠে ছিলেন লিওনেল মেসি। একটি বিশ্বকাপ ও তিনটি কোপা ফাইনাল খেলেও শুধু হতাশাই সঙ্গী হয়েছে এই ফুটবল জাদুকরের।
বয়স বলছে মহাদেশীয় আসর কোপা জেতার এটিই শেষ সুযোগ এলএমটেনের। কিন্তু পারফরমেন্স আর পরিসংখ্যান কি সে কথা বলছে?
ঘরের মাঠের আসর খেলতে হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের মাটিতে। সেই সাথে বিশ্বকাপ বাছাইয়েও খুব একটা ছন্দে নেই আলবিসেলেস্তারা। শেষ দুই ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট হারাতে হয়েছে। দিবালোকের মতো পরিষ্কার দলের ডিফেন্স ও মিডফিল্ড দুর্বলতা। যা ম্যারাডোনার দেশকে ভুগিয়েছে গেল তিন দশক।
তরুণদের নিয়ে দল গড়ে ভালো ফুটবলের আশাবাদ আর্জেন্টিনা শিবিরে। কিন্তু গত সপ্তাহে কলম্বিয়া এবং চিলির সাথে ড্র করে আর্জেন্টিনা বুঝিয়ে দিয়েছে, এখনো কাজ করার আছে অনেক জায়গায়ই। মাঠে টিম কম্বিনেশনে উন্নতির সুযোগ অনেক; বিশেষ করে ছন্নছাড়া মিডফিল্ড আর চিরকালের সমন্বয়হীন ডিফেন্সের কথা বলাই বাহুল্য। তার উপর কলম্বিয়া ম্যাচে আর্জেন্টিনার ডিফেন্সের রাইজিং স্টার ক্রিস্টিয়ান রোমেরো পড়েছেন ইনজুরিতে। ফয়েথকে স্কোয়াড থেকে বাদ দিয়ে কোচ স্কালোনি ডিফেন্সকে আরো অনভিজ্ঞ করে ফেললেন কিনা সে প্রশ্নও থেকে যায়। ওদিকে এখনো নিয়মিত ভাবেই সময় পেতে থাকা ওটামেন্ডিও তার সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন বহু আগেই।
ঘুরে ফিরে কোটি ভক্তের শঙ্কা একটাই, মেসিরা কি পারবেন বেদনার রঙে রাঙানো জার্সিকে উৎসবের রঙে রাঙাতে?
Leave a reply