জাতীয় দলের খারাপ পারফরমেন্সের দায় অধিনায়কের পাশাপাশি নিতে হবে কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের। তবে হঠাৎ করে নয়, ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্বল অবকাঠামোর কারণেই আজ ধুঁকছে বাংলাদেশ, বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট ও অভিজ্ঞ কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। মাঠের পারফরমেন্স তো বটেই, মাঠের বাইরেও যেন ছন্নছাড়া বাংলাদেশ। টিম সিলেকশন থেকে শুরু করে মাঠে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা, সব জায়গায়ই দেখা যাচ্ছে আত্মবিশ্বাসহীনতার ছাপ। কিন্তু কেন হঠাৎ এমন বর্ণহীন বাংলাদেশ? দেশের শীর্ষ দুই ক্রিকেট বিশ্লেষক বলছেন, এর দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের সবাইকে, তাদের অভিমত গলদটা রয়ে গেছে গোড়াতেই।
খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, আমরা জিততে শিখে গিয়েছিলাম। দেশের মাটির সাথে সাথে বিদেশে গিয়েও আমরা জয় পাচ্ছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে দলে এখন সৃষ্টি হয়েছে এক শূন্যতা। তবে এর দায় ক্রিকেটারদের নয়। দায় পুরো প্রক্রিয়ার।
দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটিং মাইন্ড হিসেবে পরিচিত কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, আমরা যখন জিতি তখন প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই প্রশংসা করি। কিন্তু ম্যাচ জয়ের সময়ও কিছু ব্যর্থতার ঘটনা থেকে যায়। আবার হেরে যাওয়া ম্যাচেও থাকে ইতিবাচক অনেক কিছু। প্রত্যেক বিষয়কে আলাদা করে দেখতে পারার মানসিকতা অর্জন করতে হবে আমাদের।
রিয়াদের দলের খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য বড় দায়টা যাচ্ছে ব্যাটারদের উপর। সেই সাথে মাঠে অধিনায়কের সিদ্ধান্ত নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। তবে আরেক সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট বলছেন ব্যর্থতার দায় কেবল অধিনায়কের কাঁধেই নয়, বর্তায় কোচসহ পুরো টিম ম্যানেজমেন্টের গায়েই। পাইলটের সাথে এ নিয়ে একমত হয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমও। তিনি বলেন, এই অধিনায়কের প্রশংসাই কিন্তু আমরা করেছি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর। আসলে অধিনায়কের অনেক কিছুই করার থাকে না। সবাই মিলে পারফর্ম করলেই ভালো করা সম্ভব।
খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, মাঠে হয়তো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে অধিনায়ক। তবে মাঠের বাইরেও কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব আছে পরিকল্পনা করার। যেমন, কোন বোলারকে কখন ব্যবহার করা হবে, বা কোন ব্যাটারের সময় কাকে দিয়ে বল করানো হবে এসব। তার সাথে ড্রিংক্স ব্রেক বা বোলার পানি চাইলে সাথে সাথে তার দিকে সিগনাল পাঠানো, এসব কিন্তু সম্মিলিত পরিকল্পনার অংশ।
দল গঠন নিয়েও বিচক্ষণ মনে হয়নি কর্তাদের। হঠাৎ করেই টেস্ট স্পেশালিস্ট ক্রিকেটারদের নেয়া হয়েছে টি-টোয়েন্টিতে। তাই খারাপ পারফরম্যান্সের দায় বর্তায় সিলেকশন কমিটির কাঁধেও। এ নিয়ে পাইলট বলেন, টিম ম্যানেজমেন্টের পারফরমেন্সও বিচার করতে হবে। নির্বাচকরা কেমন দল নির্বাচন করছেন সেটা তদারক করাও টিম ম্যানেজমেন্টের কাজের মধ্যেই পড়ে।
দেশসেরা কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, মুশফিকুর রহিম দলে নেই। তার সাথে আরও কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ও নেই দলে। তারা থাকলে নিশ্চয়ই পারফরমেন্স আরও ভালো হতে পারতো। আমি মনে করি, ভালোভাবে ফিরে আসার জন্য হলেও মুশফিককে দলে রাখা উচিত ছিল।
Leave a reply