আগরতলা ইমিগ্রেশনে ভারতের নতুন নিয়ম: চরম ভোগান্তিতে বাংলাদেশিরা

|

আগরতলা ইমিগ্রেশনে চরম ভোগান্তিতে বাংলাদেশিরা।

আখাউড়া প্রতিনিধি:


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে সীমান্তপথে ভারত ভ্রমণে নতুন নিয়মের ‘গ্যাঁড়াকলে’ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

আগরতলা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের জারিকৃত নির্দেশনায়, আখাউড়া – আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে এখন প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন বাংলাদেশি ভিসাধারীর বেশি ভারতে প্রবেশ না করার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আগরতলা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা ইমিগ্রেশনে জনবল সংকট, সার্ভার ও টেকনিক্যাল সমস্যা থাকায় এ নিয়ম জারি করেছে তারা।

এদিকে বাংলাদেশি যাত্রীদের অভিযোগ, আগরতলা ইমিগ্রেশন ডেস্কে পাসপোর্ট অ্যান্ট্রি করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আগরতলা ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট অ্যান্ট্রি করতে দীর্ঘ সময় লাগায় যাত্রীরা আগরতলা বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট মিস করছেন। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত যেমন হচ্ছেন তেমনি অন্যান্য ক্ষেত্রেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীদের।

সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের ইমিগ্রেশন সার্ভার আপডেট করা হচ্ছে। সার্ভার সমস্যা ছাড়াও জনবল ও টেকনিক্যাল সমস্যাও রয়েছে তাদের। ফলে অ্যান্ট্রি কালেক্ট করতে সময়ও লাগে অনেক। কিন্তু যাত্রীদের এতো সময় ধরে ডেস্কে সময়ক্ষেপণের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ফ্লাইট ধরতে পারছে না। আবার কাস্টমস ও বিএসএফে তল্লাশিতেও চরমভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। 
ভুক্তভোগীরা জানান, ত্রিপুরা রাজ্যে থাকা আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করা, ব্যবসা বা চিকিৎসা নিতে ভারত যেতে হয় বাংলাদেশিদের। নতুন এ নিয়মের ফলে মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন রোগী ও ব্যবসায়ীরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা চেকপোস্ট দিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি ভারতে যাতায়াত করেন। তাই যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ভারত সরকার আখাউড়া সীমান্তের চেকপোস্টকে আইসিপিতে উন্নীত করে। স্থলবন্দরের সকল সুযোগ-সুবিধা থাকলেও বাংলাদেশি যাত্রীরা আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পার হতেই আগরতলা ইমিগ্রেশনে বিএসএফ জওয়ান ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপেশাদার আচরণ ও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

যাত্রীরা বলছেন, আগরতলায় অধিকাংশ মানুষ যাতায়াত করেন নাড়ির টানে। তাছাড়া আখাউড়া – আগরতলা হয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতেও প্রচুর বাংলাদেশি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে যান। কিন্তু কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে যে হয়রানি ও ভোগান্তি হয় তাতে এ পথে ভারত গমনে উৎসাহ হারাবে বাংলাদেশিরা। তাছাড়াও ঢাকা এবং চট্টগ্রামের খুব কাছাকাছি হওয়ায় দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যায় আগরতলা থেকে। তাই ভোগান্তি এখানে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

আখাউড়া ইমিগ্রেশন ইনচার্জ আব্দুল হামিদ যমুনা নিউজকে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন থেকে একটি নির্দশনা আসে, প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জনের বেশি বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীকে ভারতে না পাঠানোর জন্যে। তবে, ভারত এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ৭২ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা করা করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে আড়াই শতাধিক বাংলাদেশি ভারত গমন করছে প্রতিদিন। তাছাড়া ভারত এ পর্যন্ত কাউকে ফেরতও পাঠায়নি। আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তপথে গড়ে প্রতিদিন ৪০০ থেকে সাড়ে ৪শ’ পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করে থাকে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply