ঘড়ির কাটা তখন চারটা ছুঁই ছুঁই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী এলাকায় পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করছেন লাখো মানুষ। এর মধ্যেই মাইকে ভেসে আসছে, একটি ঘোষণা। ঘোষণায় এক নারী আগতদের অনুরোধ করছেন বিকেল পাঁচটার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ত্যাগ করতে। কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আর ওই এলাকায় বসবাসরতদের জন্য এই ঘোষণা প্রযোজ্য নয়। বারবার মাইকে ভেসে আসা ঘোষণার কারণে রমনা ও সোহরাওয়ার্দীতে থাকা অনেকেই তখন সেখান থেকে বেরোনোর জন্য গেটের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। কঠোর নিয়নকানুনের কারণে চাইলেই এ দুটি জায়গা থেকে সুবিধাজনক গেট দিয়ে বের হওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
সরকারের পক্ষ থেকে বৈশাখীর অনুষ্ঠানের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এরপর কেউ খোলা মাঠে কোনো অনুষ্ঠান চালাতে পারবেন না। নির্দেশনা মতো রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিকাল ৪টার পরই আয়োজকরা তাদের অনুষ্ঠান গোছানোর কাজ শুরু করেন। দর্শকরাও ধীরে ধীরে ঘরমুখো হতে শুরু করবেন। এমন সময় আকাশ কালো করলো। কিছুক্ষণ দমকা হাওয়া বওয়ার পরই শুরু হলো বৃষ্টি। রাস্তাঘাটে থাকা হাজারো মানুষ যে যার মতো ছুটলেন আশ্রয়ের খোঁজে।
এভাবেই শেষ হলো আজকের বৈশাখী উদযাপন। কেউ কেউ রাস্তার আশপাশে কোথাও আশ্রয় নিতে পারলেও বেশিরভাগই ভিজে জবুথবু। অবশ্য অনেকেই আবার ইচ্ছা করেই বৃষ্টিতে ভিজে বৈশাখ ও বৃষ্টি উৎসব একসঙ্গেই করেছেন।
দিনের বেলা ঝলমলে রোদ। বিকাল গড়াতেই আকাশ কালো করে নামল কালবৈশাখী। বাদল হাওয়ায় এভাবেই বাংলার ১৪২৫ সনকে বরণ করে নিল প্রকৃতি। কালবৈশাখীর মেজাজও মন্দ ছিল না। আজ শনিবার বিকেলে ঝোড়ো বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৪৪ কিলোমিটার। এর সঙ্গে রাজধানীর আগারগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা বিভাগের ঢাকা, নরসিংদী গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, ফরিদপুর; কুমিল্লা ও সিলেট জেলার ওপর দিয়ে বিকেলে ঝড় বয়ে গেছে। নোয়াখালী ও বরিশালের ওপরও কালবৈশাখীর ঝাপ্টা সন্ধ্যা নাগাদ লাগতে পারে।
Leave a reply